শনিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্যদের সুপ্রিম কোর্টের সন্মাননা

প্রকাশিত : ০৮:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ৫ নভেম্বর ২০২২ শনিবার ৮০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

সংবিধান প্রণয়নের ৫০ বছর পর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের উদ্যোগে প্রথমবাবের মতো সংবিধান প্রণয়ন কমিটির ৩৪ সদস্যদের মধ্যে জীবিত তিনজনকে সন্মাননা দেওয়া হয়।

এ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্স মিলনায়তনে ‘সংবিধান গৃহীত হওয়ার সুবর্ণজয়ন্তী’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

সন্মাননাপ্রাপ্তরা হলেন- সংবিধান প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ। এছাড়া কমিটির মৃত সদস্যদের পরিবারের হাতে সন্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়েছে।

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সংবিধানকে পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করার দায়িত্ব বঙ্গবন্ধু ভবিষ্যত প্রজন্মের উপর ন্যস্ত করেছেন। বঙ্গবন্ধুর দর্শন ধারণ করে বাংলার মানুষের আশা-আকাঙখা পূরণের মধ্য দিয়ে অর্থবহ হয়- সেই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, বিচার নিশ্চিতকরণ, ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ও বিচার কার্যক্রমকে গতিশীল করার মধ্য দিয়ে বিচারপ্রাপ্তি সহজলভ্য করার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট এবং জাতীয় সংসদ অনন্য ভূমিকা রেখে চলছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর দেশবিরোধীরা সংবিধানকে নিয়ে ফুটবল খেলেছে। তারা চায়নি এই সংবিধান সমুন্নত থাকুক। সরকার সংবিধান সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী, সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের অনুকরণে সুপ্রিম কোর্ট প্রকাশিত স্মারক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

সংবিধান দিবস উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় বক্তারা বলেন, ধর্মের নামে রাজনীতি বঙ্গবন্ধুর সংবিধানে থাকতে পারে না। সাম্প্রদায়িকতা বাংলাদেশের সমাজকে প্রভাবিত করছে। সমাজের প্রতিটি স্তরে ধর্মান্ধতা ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধর সময় বাংলাদেশের ৩০ ভাগ মানুষ স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছিল। সেই সংখ্যা এখনও কমে যায়নি। স্বাধীনতাবিরোধীরা প্রকাশ্যে বলছে, ১০ ডিসেম্বরের পর এই সরকার আর থাকবে না। নির্বাচন, সরকার ছাড়া সাংবিধানিকভাবে এটা কেমন করে সম্ভব? তারা সংবিধান মানে না বলেই এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলছে। পৃথিবীতে আমাদের রাষ্ট্রই একমাত্র রাষ্ট্র যেখানে স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ বলতে হয়।

সংগঠনের সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আরমা দত্ত, শিক্ষাবিদ শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, মানবাধিকার নেতা কাজী রিয়াজুল হক ও প্রসিকিউটর মো. মোখলেসুর রহমান বাদল।

‘মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি’র উদ্যোগে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল মিলনায়তনে ‘সংবিধানের ৫০ বছর ও আমাদের মৌলিক অধিকার’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহদীন মালিকের সভাপতিত্বে এবং ড. শাহানাজ হুদার সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল ও আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, মৌলিক অধিকার পরিপন্থী বিভিন্ন কালো আইন সংসদে পাশ হয়েছে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া আদালতকে সেগুলো বাতিল বলে ঘোষণা করতে দেখা যায়নি। বলা যায়, মৌলিক অধিকার ধনী ব্যক্তি এবং ক্ষমতাসীনদের অধিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, নাগরিক সমাজ থেকে সংবিধানের কিছু সুস্পষ্ট সংস্কারপ্রস্তাব উত্থাপন করা প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে ড. শাহদীন মালিক বলেন, বিচার বিভাগে বিচারপতি নিয়োগের পন্থা মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির বিষয়ে মামলার সংখ্যা খুবই নগণ্য। সমাজে বিভিন্নভাবে নারীদের প্রতি বৈষম্য হলেও নারী বৈষম্যের ক্ষেত্রে কেউ মামলা করেনা।

দেশে প্রথমবারের মতো শুক্রবার জাতীয়ভাবে সংবিধান দিবস পালন করা হয়। গত ৩১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রতি বছরের ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস পালনের বিষয়টির অনুমোদন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। গণমাধ্যমে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। দিবসটি পালনের জন্য শনিবারও কয়েকটি সংগঠনের পৃথক কর্মসূচি পালনের কথা রয়েছে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT