বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি ◈ একুশেই মিলবে স্টার্টআপ ঋণ, সুদ হার মাত্র ৪ শতাংশ ◈ আলিম ও কারিগরি এইচএসসির সারাদেশের পরীক্ষা স্থগিত ◈ কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডের কালকের এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত ◈ গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তকারীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র ◈ ট্রাম্পের সমালোচনার পর ইউক্রেনে রাশিয়ার রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলা ◈ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ ◈ নিহতের ফোনের ভিডিওতে মিলল ৫ আগষ্ট হত্যাকাণ্ডের চিত্র ◈ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে দুর্ঘটনায় চীনা প্রকৌশলী নিহত ◈ ফেনীতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত, নেই বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক

শেয়ারবাজারে কারসাজি হোয়াটসঅ্যাপে

প্রকাশিত : ০৯:০৩ পূর্বাহ্ণ, ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার ১০০ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে শেয়ারবাজারে কারসাজি বাড়ছে। সম্প্রতি এ ব্যাপারে ‘টি-টু আইটেম ফর শেয়ার মার্কেট’ নামে আরও একটি গ্রুপ চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তারা ‘হোয়াটস অ্যাপ’র মাধ্যমে একটি গ্রুপ খুলে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছিল। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য উদঘাটনে সম্প্রতি দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সংস্থাটি। কমিটির সদস্যরা হলেন-বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওহিদুল আলম ও সার্ভিলেন্স বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সহিদুল ইসলাম। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। বিএসইসি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বুধবার বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে বাজারে কারসাজি রোধে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে কমিশন। এক্ষেত্রে সার্ভিল্যান্সের পাশাপাশি মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বাজারে গুজব ছড়াচ্ছে, সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের কিছু গ্রুপকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। এই তদন্ত রিপোর্টের আলোকে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ বা যে কোনো মাধ্যম ব্যবহার করে হোক, কারসাজি করে কেউ পার পাবে না।

জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন এ ধরনের কাজ বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা। বিএসইসিকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষ করে অনলাইনে তাদের দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে।

জানা গেছে, প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৭ জানুয়ারি বুধবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিশন। বিএসইসির পরিচালক মো. মাহমুদুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়- সম্প্রতি ‘টি-টু আইটেম ফর শেয়ার মার্কেট’ নামে ‘হোয়াটস অ্যাপ’ গ্রুপে একটি চক্র শেয়ারের বাজার মূল্য নিয়ে বিভিন্ন অপরাধ করে আসছিল। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে-মার্কেট ম্যানিপুলেশন (বাজার কারসাজি), গুজব ছড়ানো ও পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করা, বিনিয়োগকারীদের প্রতারিত করা এবং শেয়ারবাজার সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য প্রচার। বাজারে শৃঙ্খলার স্বার্থে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো। কমিটি ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেবে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ারবাজার নিয়ে গুজব ছড়ানো নতুন কোনো বিষয় নয়। এর আগে ২০২২ সালে আরেকটি গ্রুপ চিহ্নিত করে কমিশন। তারা ডলারের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে আসছিল। শেয়ার ছেড়ে দিয়ে ডলার কিনে রাখার পরামর্শ দিয়েছিল তারা। ফেসবুক গুজব ছড়ানোর দায়ে মো. মাহবুবুর রহমান নামে একজনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। বিএসইসির সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময়ে শেয়ার বাজার নিয়ে গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করতে ‘সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং সেল’ গঠন করে বিএসইসি। শেয়ারবাজারে গুজব নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে তারা। ইতোমধ্যে শতাধিক ফেসবুক আইডি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

এর আগে বিভিন্ন সময়ে এ সংক্রান্ত আরও কিছু আইডি চিহ্নিত করেছিল কমিশন। এর মধ্যে অ্যাকটিভ ইনভেস্টরস ফোরাম, শেয়ার ইনডেক্স, গেইনার ক্লাব, বিডি স্টক অ্যানালাইসিস, স্টেকহোল্ডার, স্টক হেল্প ডেস্ক, মানি ডাবল গ্রুপ এবং লিকুইড ক্যাপিটাল ইত্যাদি। এসব গ্রুপে ২ হাজার থেকে ৪০ হাজার পর্যন্ত সদস্য রয়েছে। গ্রুপগুলো ফেসবুকে বিভিন্ন নামে অ্যাকাউন্ট খুলে বিনিয়োগকারীদের ইনবক্সে মেসেজ পাঠায়। গ্রুপের সদস্য হওয়ার জন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেয়। আর সদস্য হওয়ার পর মোবাইলে কল অথবা এসএমএসের মাধ্যমে শেয়ারের নাম জানিয়ে দেওয়া হয়। এরা নিজেদের শেয়ারবাজার বিশ্লেষক হিসাবেও দাবি করছেন। তবে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী, বিএসইসির সনদ ছাড়া কারও বাজার বিশ্লেষক হওয়ার সুযোগ নেই। আইনে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের শাস্তি সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও ন্যূনতম পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা।

জানা গেছে, ফেসবুকের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কারসাজির বিষয়টি ২০১০ সালে প্রথম বিএসইসির নজরে আসে। ওই সময়ে র‌্যাবের সহযোগিতায় প্রিমিয়ার ব্যাংক ব্রোকারেজ হাউজের মাহবুব সারওয়ার নামের এক কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছিল সংস্থাটি। পরবর্তী সময়ে তাকে র‌্যাব আটক করে পুলিশে দিলে বিএসইসি বাদী হয়ে তার নামে মামলা করে। এ ছাড়াও ফেসবুকের মাধ্যমে কারসাজির কারণে ২০১৫ সালে পুঁজিবাজার বিষয়ক বিশেষ ট্রাইব্যুনাল একটি ব্রোকারেজ হাউজের সাবেক এক কর্মকর্তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর ১৭ ধারা এবং ১৯৯৩ সালের সিকিউরিটিজ আইনের ১০ ধারা অনুসারে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স ব্যতিত পুঁজিবাজার সম্পর্কিত আগাম কোনো তথ্য প্রচার করতে পারে না। কেউ করলে তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে আর্থিক জরিমানা করতে পারে বিএসইসি। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল কেস করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT