সোমবার ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটার উপস্থিতির প্রতি বিদেশিদের আগ্রহ

প্রকাশিত : ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ, ৩০ নভেম্বর ২০২৩ বৃহস্পতিবার ৪৪ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির প্রতি বিদেশিদের আগ্রহ রয়েছে। নির্বাচনি প্রক্রিয়াও বিভিন্ন দেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করায় ভোটার উপস্থিতি মাত্রাতিরিক্ত কমে গেলে তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তফশিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকে কিনা সেটিও বিবেচ্য। প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলা এবং ভোটে কারচুপি হয় কিনা এসব বিষয়ের প্রতিও বিদেশিদের আগ্রহ রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আসছে। কিন্তু ২৮ অক্টোবর সহিংস ঘটনা গোটা পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে দেয়। বিএনপিসহ সমমনা এবং জামায়াতের মহাসমাবেশ কর্মসূচিকে ঘিরে সহিংসতায় একজন পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা, পুলিশ হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্সে হামলা এবং প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মামলা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একটি সংলাপ আয়োজনের চেষ্টা চালায়।

সংলাপ আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস যৌথ স্বাক্ষরে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির কাছে চিঠি পাঠায়। বিএনপি ও জাতীয় পার্টি যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও আওয়ামী লীগ বলেছে, সংলাপের এখন আর সময় নেই। বিএনপিও নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তে অটল থাকে। ফলে সংলাপ আয়োজনে কূটনৈতিক উদ্যোগ ভেস্তে যায়।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্র্বাচনের পথে যারা বাধা সৃষ্টি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দিল্লিতে সম্প্রতি ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ২+২ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উভয় দেশের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা নেতৃত্ব দেন। বৈঠকের এজেন্ডায় বাংলাদেশের প্রসঙ্গ না থাকলেও বিষয়টি নিয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়। নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করলে আঞ্চলিক সমস্যা হতে পারে বলে ভারতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে ভারতের এ অভিমতে যুক্তরাষ্ট্র আশ্বস্ত কিনা তা জানা যায়নি।

সূত্রটি আরও জানায়, ভিসানীতি ছাড়া ভোটের আগে যুক্তরাষ্ট্র আর কোনো পদক্ষেপ নেবে না বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে ভোটের প্রক্রিয়ার প্রতি তাদের বিশেষ নজর থাকবে। বিশেষ করে ভোটার উপস্থিতির বিষয়টির প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি। নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় অনিয়ম এবং ভোটার উপস্থিতি একেবারে কম হলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর কাছে বিশ্বাসযোগ্য নাও হতে পারে। ফলে ভোটের পরেও ওয়াশিংটনের চাপ অব্যাহত থাকতে পারে। বিষয়টি সরকারের দুশ্চিন্তার কারণ।

বাংলাদেশে সাধারনত দুই বড় দল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিলে ভোটার উপস্থিতি বেশি হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনে গড়ে ভোট পড়েছে ৮৭ শতাংশ। নৌকা ৪৮ শতাংশ এবং ধানের শীষ ৩২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। সেই তুলনায় ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি খুবই কম ছিল। ১৫৩টি আসনে আওয়ামী লীগ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যায়। ২০১৮ সালে বিএনপি অংশ নিলেও ভোটের প্রক্রিয়া প্রশ্নাতীত ছিল না। বিএনপি খুব বেশি আসন পায়নি।

আগামী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কমে গেলে নির্বাচন নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনা হতে পারে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো এ ব্যাপারে হতাশা ব্যক্ত করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ দলের নেতাকর্মীদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের পক্ষে দলটির যুক্তি হল, কয়েকটি সিটি নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়াও ভোটার উপস্থিতি ভালো ছিল। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ৫৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। রাজশাহীতে ৫৬ শতাংশ, সিলেটে ৪৭ শতাংশ এবং খুলনায় ৪৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বেশ সক্রিয়। নির্বাচনি প্রক্রিয়া নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছেন। চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বুধবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। প্রতিনিধিদলটি অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চেয়েছে। বাংলাদেশ সরকার বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতাকে অনভিপ্রেত বলে বিবেচনা করে। যদিও ভারত, চীন ও রাশিয়া মনে করে, নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্তিৎস্কি এবং চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বেশ সক্রিয়। সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিএনপির একজন নেতার সঙ্গে অক্টোবরের শেষদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলন নিয়ে বৈঠক করেছেন। এটাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলে মনে করে রাশিয়া।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT