বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারত-পাকিস্তানের যে অনলাইন প্রেমের গল্প শেষ হল কারাগারে

প্রকাশিত : ০৮:০৬ অপরাহ্ণ, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ শুক্রবার ৯২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

জানুয়ারিতে এক পাকিস্তানি নারীকে ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করানোর জন্য এবং তাকে জাল আইডি কার্ড পেতে সহায়তা করায় এক ভারতীয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ভারতীয় ব্যক্তি যাকে সাহায্য করেছেন তিনি সম্পর্কে তার স্ত্রী ছিলেন।

ভারতের ২১ বছর বয়সী মুলায়াম সিং যাদব এবং পাকিস্তানের ১৯ বছর বয়সী ইকরা জিওয়ানির প্রথম পরিচয় হয় তিন বছর আগে। বোর্ড গেম লুডো খেলার সময়ে অনলাইনে দেখা হয় এবং সেখান থেকেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। কিন্তু তারা জানতেন যে তাদের একসাথে থাকা অনেক কঠিন হবে। খবর বিবিসির

গত সেপ্টেম্বরে মুলায়াম ও ইকরা নেপালে ভ্রমণে যান, যেখানে তারা বিয়ে করেন। তারপরে তারা ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী ব্যাঙ্গালুরু শহরে ভ্রমণ করেন এবং একসাথে বসবাস শুরু করেন।

কিন্তু জানুয়ারিতে তাদের সুখী দাম্পত্য জীবন হঠাৎ বিষিয়ে ওঠে- ইকরা জিওয়ানিকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের জন্য আটক করা হয় এবং জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় যাদবকে। জালিয়াতি এবং যথাযথ কাগজপত্র ছাড়াই একজন বিদেশী নাগরিককে ভারতে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ ওঠে যাদবের বিরুদ্ধে।

ইকরা জিওয়ানিকে গত সপ্তাহে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া হয় এবং যাদব বর্তমানে বেঙ্গালুরুর কারাগারে আছেন।

যাদবের পরিবারের সদস্যরা, যারা উত্তর ভারতের উত্তর প্রদেশে বসবাস করেন, তারা এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন। তারা বলছেন যে, এই দম্পতির গল্পটি কেবল একটি প্রেমের ঘটনা।

যাদবের ভাই জিৎলাল বলেন, ‘আমরা তাদের বাড়ি ফিরে পেতে চাই। আমরা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার পরিস্থিতি বুঝতে পারি। কিন্তু তারা শুধুই প্রেমে পড়েছে।’

এমনকি পুলিশও তাদের এমন কথায় সম্মতি জানিয়েছে বলে মনে হয়।

‘অবৈধ প্রবেশ এবং জালিয়াতি ছাড়াও, এটি একটি প্রেমের গল্প বলে মনে হচ্ছে।’ বেঙ্গালুরুর এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ কথা বলেন।

এই প্রেমের গল্প শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে, কোভিড লকডাউনের সময়। যাদব বেঙ্গালুরুতে একটি আইটি কোম্পানির নিরাপত্তা প্রহরী হিসাবে কাজ করতেন এবং মিসেস জিওয়ানি পাকিস্তানের হায়দ্রাবাদ শহরের ছাত্রী ছিলেন।

অনলাইনে দেখা হওয়ার পর দু’জনেই এতো দীর্ঘ দূরত্বে থাকা সত্ত্বেও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু ইকরা জিওয়ানিকে বিয়ে জন্য তার পরিবারের চাপ দিতে থাকলে তিনি যাদবের পরামর্শে, পাকিস্তান ছেড়ে আসেন এবং যাদবের সাথে দেখা করতে দুবাই হয়ে নেপালে যান। পুলিশ বলছে, সেখানকার একটি মন্দিরে হিন্দু রীতিতে বিয়ে করেন তারা, এরপর ভারতে ফিরে আসেন।

কিন্তু জিওয়ানির কাছে ভারতে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল না, তাই যাদব তার জন্য একটি জাল আধার কার্ডের ব্যবস্থা করে-যা ভারতীয় নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র।

পুলিশের মতে,যাদব প্রতিদিন কাজের জন্য বাইরে যেতেন যখন জিওয়ানি বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু তিনি প্রায়ই পাকিস্তানে নিজ বাড়িতে তার মায়ের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে কল করতেন, যার ফলে পুলিশ তার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।

বেঙ্গালুরুর পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তারা গত মাসে বেশ সতর্ক অবস্থায় ছিলেন কারণ ফেব্রুয়ারিতে ওই শহরে দুটি বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট হওয়ার কথা ছিল: অ্যারো ইন্ডিয়া এয়ার শো এবং একটি জি-টুয়েন্টি অর্থমন্ত্রীদের বৈঠক।

আরও তদন্তের পর, ইকরা জিওয়ানিকে অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের জন্য আটক করা হয় এবং ২০শে জানুয়ারি ফরেনার্স রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসে হস্তান্তর করা হয়। পরে ফেব্রুয়ারিতে তাকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

বেঙ্গালুরুর হোয়াইটফিল্ড জেলার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার এস গিরিশ বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত, তার বিরুদ্ধে শুধু অবৈধভাবে দেশে আসা ছাড়া আর কোনও অপরাধের অভিযোগ নেই। তবে তদন্ত চলছে।’

যাদবের মা শান্তি দেবী বলেছেন যে তিনি আশা করেন দুই দেশের সরকার তাদের পুনরায় এক করতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, ‘সে মুসলিম না পাকিস্তানি তা আমরা চিন্তা করি না, সে আমাদের পুত্রবধূ। আমরা তার ভালো যত্ন নেব।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT