ব্যবস্থাপনায় সমন্বয়হীনতা
প্রকাশিত : ০৭:৫৬ পূর্বাহ্ণ, ৬ এপ্রিল ২০২০ সোমবার ২৬৪ বার পঠিত
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারি অব্যবস্থাপনায় ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সমন্বয়হীনতা চরম বিপর্যয়ের সম্ভাবনা জেনেও গত দুই দিনে স্রোতের মতো ঢাকায় এসেছেন কয়েক লাখ গার্মেন্টসকর্মী। এ কারণে ওইসব শ্রমিকসহ গোটা রাজধানী ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রোববার থেকে গার্মেন্ট খোলা হবে এমন খবর পেয়ে গত দুই দিনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে ঢাকা ও আশেপাশের গার্মেন্টসগুলোতে হাজির হয়েছেন কর্মীরা। এতে করে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে গত শনিবার ১১ এপ্রিল পর্যন্ত গার্মেন্টস বন্ধ রাখার অনুরোধ জানান বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক। ৫ এপ্রিল গার্মেন্টস খোলা হবে এমন তথ্য সকলেরই জানা ছিলো।
কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে দিয়েই শত শত লোক রাস্তায় নেমে আসে ঢাকার উদ্দেশে। শনিবার গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকা অভিমুখে ঢল ঠেকাতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এরপর গতকাল রোববার আইজিপি ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে কড়াকড়ি আরোপ করেছেন। কিন্তু কেন এ ব্যবস্থা ৩ এপ্রিল নেয়া হলো না প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। দায়িত্বশীলদের উদাসীনতার ফলে চরম ঝুঁকিতে
বাংলাদেশ পতিত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোববার তামজিদ হোসেন নামে একজন লিখেছেন— যা হওয়ার তো হয়েছে, এখন কারখানা বন্ধ করে কী হবে। আগে কেন ব্যবস্থা নেয়া হলো না? কয়েক লাখ গার্মেন্ট শ্রমিক ও পুরো রাজধানীকে কেন ঝুঁকিতে ফেলা হলো।
শুধু গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঝুঁকির মুখে ঢাকায় আনা নয়, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সমন্বয়হীনতা ছিলো শুরু থেকেই। সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে মাঠ প্রশাসনের দপ্তর ও কর্মকর্তাদরে সমন্বয়হীনতা দেখা যাচ্ছে।
বিশেষ করে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিভিল সার্জনের মধ্যে এ সমন্বয়হীনতা বেশি। যে কাজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা কথা সেটি করছে পুলিশ, আবার যেটি সিভিল সার্জন করার করা সেটি করছে সিভিল প্রশাসন।
গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢাকার আনার বিষয়টির সুযোগ দেয়া হয় জনপ্রশাসনের প্রজ্ঞাপনেই। গত ১ এপ্রিল সরকারি ছুটি বাড়িয়ে দেয়ার প্রজ্ঞাপনে এই সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়।
করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এসময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে। দেশে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সচিবালয়ে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও তার পরের দুই দিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। এর সঙ্গে মার্চের ২৯, ৩০, ৩১ এবং এপ্রিলের ১, ২ সাধারণ ছুটি সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর পর ৩ ও ৪ এপ্রিল আবার সাপ্তাহিক ছুটি। এছাড়া বিভাগীয় ও জেলাশহরগুলোতে সামাজিক দূরত্ব এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থার জন্য বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে সেনাবাহিনী নিয়োজিত হবে।
দুই লাখ কর্মী ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থাকলেও উপেক্ষিত পুলিশ : করোনা মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে চরম সমন্বয়ের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। এতে নিজেদের কর্মকর্তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে বৈরিতা। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের বঞ্চনার কথা তুলে ধরছেন।
বিশ্বের দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ এবং দিকনির্দেশনা দেয়ার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নেতৃত্বে কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগ।
এতে সশস্ত্রবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ২৬ জন সচিব থাকলেও সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) রাখা হয়নি।
করোনা মোকাবিলায় দুই লাখ পুলিশ সদস্য কাজ করলেও পুুলিশপ্রধানকে কমিটিতে না রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পুলিশ ক্যাডার কর্মকর্তারা।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।