শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতার শঙ্কা

প্রকাশিত : ০৮:৪১ পূর্বাহ্ণ, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ বুধবার ১৮ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণিকরণের নতুন নিয়ম ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পাওয়ার শর্ত নিয়ে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের স্থবিরতা, ব্যাংক খাতে অস্থিতিশীলতা এবং কর্মসংস্থানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে শঙ্কিত সংশ্লিষ্ট মহল।

বিনিয়োগের স্থবিরতা

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় ১৭ শতাংশ। বিনিয়োগ স্থবিরতা এবং উৎপাদনে ধীরগতি প্রমাণ করে যে, আর্থিক খাত এখনো সংকটের মধ্যে রয়েছে।

নতুন নিয়মের শর্ত

বাংলাদেশ ব্যাংকের মাস্টার সার্কুলার অনুযায়ী, সব ধরনের ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়েছে। নিম্নমানের ঋণের জন্য ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের জন্য ৫০ শতাংশ এবং মন্দ ঋণের জন্য ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়বে।

ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

ডিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি শামস মাহমুদ এ সিদ্ধান্তকে “বেসরকারি খাতবিরোধী” উল্লেখ করে বলেছেন, এটি বিনিয়োগকে ব্যাহত করবে এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলবে। বিজিএমইএর পরিচালকও জানিয়েছেন, তৈরি পোশাক খাত এ নতুন নীতির কারণে বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে।

অর্থনীতির বর্তমান চিত্র

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও উৎপাদনে স্থবিরতার কারণে অর্থনীতি মন্দার দিকে এগোচ্ছে।” অন্যদিকে, ব্যাংকারদের মতে, নিয়মিত এবং খেলাপি ঋণের জন্য অতিরিক্ত প্রভিশন সংরক্ষণ ব্যাংকের মুনাফা কমিয়ে দেবে এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে।

ব্যবসায়ীদের শঙ্কা ও সুপারিশ

ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেছেন, কভিড-পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি এখন আরও বেশি চাপে রয়েছে। তিনি মনে করেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা উচিত।

বাংলাদেশের আর্থিক খাত এবং সামষ্টিক অর্থনীতি ইতোমধ্যেই সংকটের মধ্যে রয়েছে। ঋণ শ্রেণিকরণের নতুন নিয়ম ব্যাংক এবং বেসরকারি খাতের ওপর চাপ আরও বাড়াবে। এ অবস্থায় আইএমএফের সঙ্গে পুনরায় আলোচনার মাধ্যমে একটি সময়োপযোগী সমাধানে আসা প্রয়োজন। অন্যথায়, এই সিদ্ধান্ত দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT