বাস থেকে ফেলে যাত্রী হত্যা: চালক ও দুই সহকারীকে দিতে হবে উপযুক্ত শাস্তি
প্রকাশিত : ০৮:০৩ পূর্বাহ্ণ, ১১ জুলাই ২০২২ সোমবার ১২৪ বার পঠিত
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের জয়দেবপুর-চান্দনা সড়কের শিববাড়ি এলাকায় ঘটেছে এক মর্মান্তিক ঘটনা। ভাড়া নিয়ে বাসচালকের দুই সহকারীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়েছিলেন এক যাত্রী। একপর্যায়ে দুই সহকারী ওই যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়। এরপর তাকে চাকায় পিষে গাড়ি চালিয়ে চলে যায় চালক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে তাকওয়া পরিবহণের একটি যাত্রীবাহী বাস জয়দেবপুর থেকে চান্দনা চৌরাস্তার দিকে যাচ্ছিল। জোড়পুকুরে বাসটিতে উঠেছিলেন ওই যাত্রী। শিববাড়ি এলাকায় পৌঁছলে বাসটির চালকের দুই সহকারীর সঙ্গে ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় তার। একপর্যায়ে তারা দুজন মিলে সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। এ সময় চালক তাকে চাকায় পিষ্ট করে চলে যায়। ঘটনার পর স্থানীয়রা বাসটি আটক করেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে বাসচালক ও তার এক সহকারীকে আটক করেছে, অপর সহকারী পালিয়ে যায়। তাকেও আটকের চেষ্টা চলছে।
বলা বাহুল্য, আলোচ্য ঘটনাটি যারপরনাই মর্মান্তিক। আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, এর আগেও এ ধরনের ঘটনা আরও ঘটেছে। বস্তুত পরিবহণ খাতের শ্রমিকরা যাত্রীদের সঙ্গে এমন আচরণ করে থাকে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রায়ই লক্ষ করা যায়, ভাড়া নিয়ে তাদের সঙ্গে যাত্রীদের কথা কাটাকাটি হয় এবং এক পর্যায়ে তারা সংশ্লিষ্ট যাত্রীর সঙ্গে শুধু দুর্ব্যবহারই করে না, মাঝে মাঝে তাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় এবং কখনো কখনো ফেলে দেওয়া যাত্রী গাড়ির চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে মারা যান। বৃহস্পতিবারের ঘটনাটি এই প্রবণতারই উদাহরণ।
পরিতাপের বিষয়, এসব বর্বরোচিত ঘটনা একের পর একে ঘটে চলেছে এবং এর প্রতিকার হচ্ছে না। এক কথায় বলা চলে, পরিবহণের অশিক্ষিত শ্রমিক শ্রেণি একটি সংঘবদ্ধ শক্তি এবং এদের কাছে যাত্রীসাধারণ জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই সংঘবদ্ধ শক্তির বিরুদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে গেলে কখনো কখনো তারা ধর্মঘট ডেকে বসে। তাতে তৈরি হয় আরেক ধরনের সংকট।
আমাদের কথা হলো, পরিবহণ খাতের শ্রমিকরা যা খুশি তা-ই করবে, এটা হতে পারে না। আলোচ্য ঘটনাটি নিঃসন্দেহে এক হত্যাকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে এবং বাসটির চালক ও তার দুই সহকারীকে পেতে হবে উপযুক্ত শাস্তি। পরিবহণ খাতের শ্রমিক সংগঠনগুলোর নেতৃত্ব সাধারণত অন্যায়কারী শ্রমিকের পক্ষ নিয়ে থাকে। এ প্রবণতারও অবসান হওয়া দরকার। সরকার ও পরিবহণ খাতের শ্রমিক নেতা-দুই পক্ষই যদি অন্যায়কারী শ্রমিকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়, তাহলেই সম্ভব এ ধরনের অপমৃত্যু রোধ করা।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।