ফল সংরক্ষণে নিরাপদ পদ্ধতি
প্রকাশিত : ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, ২০ জুন ২০২০ শনিবার ৮৯ বার পঠিত
ভোগ্যপণ্যে ভেজাল মেশানো নিয়ে আমাদের উদ্বেগের শেষ নেই। বিশেষ করে বিভিন্ন মৌসুমি ফলে কত ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানো হয়, গণামাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন সময়ের প্রতিবেদনগুলোর দিকে তাকালেই তা স্পষ্ট। ফলে ক্ষতিকর রাসায়নিক থাকার সংশয়ে অনেক ভোক্তা বাজার থেকে মৌসুমি ফল ক্রয় করা প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তাদের জন্য একটি স্বস্তির খবর হল- আম পাকাতে ও সংরক্ষণে রাসায়নিকের ব্যবহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট নতুন এক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে।
এ পদ্ধতি ইতোমধ্যে অনেকের কাছে জনপ্রিয়ও হয়ে উঠেছে। এ পদ্ধতিতে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার ফুটন্ত গরম পানির ভাপে আম মাত্র পাঁচ মিনিট রাখলেই সংরক্ষণকাল বাড়বে। গুণগত মান অক্ষুণ্ন রেখে এতে আমের পচনও রোধ করা সম্ভব। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন এ পদ্ধতিতে পরিশোধনের পর আম প্যাকেটজাত করলে পরিশোধন না করা আমের তুলনায় অতিরিক্ত সাত দিন পর্যন্ত এর গুণগত মান অক্ষুণ্ন থাকে। রাসায়নিকের ব্যবহার ছাড়া ফল দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের এ খবরে ফল চাষী, ব্যবসায়ী, ভোক্তাসহ সংশ্লিষ্টরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন। আরও স্বস্তির বিষয়- নতুন এ পদ্ধতিতে পরিশোধনের খরচও কম।
যথেচ্ছ রাসায়নিক ব্যবহারের পাশাপাশি বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য উৎপাদনে রাসায়নিকের ভুল ব্যবহারের অভিযোগও পুরনো। এছাড়া অসাধু উৎপাদক ফলন বাড়াতে অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করেন কিনা, এ নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। ‘হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি’র মতো নানা ধরনের নিরাপদ পদ্ধতি উদ্ভাবন করা সম্ভব হলে ফলের উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণন- এসব কাজে জড়িতরা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী রাসায়নিক ফলে মেশানোর চেষ্টা করবে না বলে আশা করা যায়।
নিরাপদ পণ্যের জোগান দেয়া সম্ভব হলে সারা দেশে আমাদের দেশি ফলের চাহিদা আরও বাড়বে। একই সঙ্গে বিদেশেও এসব পণ্যের চাহিদা দ্রুত বাড়তে থাকবে। আমাদের মৌসুমি ফল রফতানি করে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সম্ভাবনা তৈরি হবে এতে। এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ‘হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি’র মতো বিভিন্ন ধরনের নিরাপদ পদ্ধতির সুফল যাতে দেশের প্রান্তিক চাষীরাও পেতে পারেন, তার জন্য সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া দরকার। ফল চাষকে লাভজনক করা গেলে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়বে। কোনো অসাধু উৎপাদক ফলন বাড়াতে অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করেন কিনা বা কেউ ফলে ক্ষতিকর রাসায়নিক মেশানোর চেষ্টা করেন কিনা- অনুসন্ধান করে দেখার জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হলে এ খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাবে এবং দেশীয় ফলমূলের প্রতি সবার আগ্রহ বাড়বে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।