শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টাকে দ্রুতই শ্বেতপত্র দেয়া হবে

প্রকাশিত : ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ৪ নভেম্বর ২০২৪ সোমবার ২৪ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, দ্রুত শ্বেতপত্র প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে দেয়া হবে। তিনি বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নেবে এটি নিয়ে কী করা হবে। সচিবরা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগের দাবি করেছেন জানিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটিকে সচিব ও সিনিয়র সচিবরা জানিয়েছেন যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রশাসন রাজনৈতিকভাবে জিম্মি ছিল। অর্থ লুটপাটের জন্য প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নেও রাজনৈতিক প্রভাব ছিল বলে তারা অভিযোগ করেছেন। এখন তারা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দাবি করেছেন। ‘প্রকল্প নেয়ার আগেই জমি কেনার অনিয়ম পাওয়া গেছে, প্রকল্পের দরকারি যন্ত্রপাতি কিনতে দুর্নীতি করা হয়েছে, ঠিকাদার নিয়োগেও অনিয়ম করা হয়েছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। একই সঙ্গে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) দুর্বলতা কাটানো দরকার জানিয়ে ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা ও চলমান সংস্কার কাজ ঠিক মতো হলে জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। কমিটিপ্রধান বলেন, দ্রুত শ্বেতপত্র প্রধান উপদেষ্টার হাতে দেয়া হবে। এরপর সরকার সিদ্ধান্ত নেবে এটি নিয়ে কী করা হবে।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে একনেক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। সরকারের ৮৫ জন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করেছে শ্বেতপত্র কমিটি। বৈঠকে ৩২ জন সচিব ও সিনিয়র সচিব উপস্থিত ছিলেন। সেই বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, বিগত সরকারের আমলে উন্নয়নের যে বয়ান দেয়া হয়েছে, তা গভীর করার ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসনের ভূমিকা ছিল। এমনকি সেই প্রক্রিয়ায় তারা আইনি কাঠামো অতিক্রম করে গেছে। বাস্তবতা হলো, প্রশাসন সম্পূর্ণভাবে রাজনীতির কাছে জিম্মি ছিল।

তিনি বলেন, আমলাদের মধ্যে কেউ কেউ সাহস নিয়ে দাঁড়িয়েছেন। সে ক্ষেত্রে তারা ব্যত্যয় ঘটাতে পেরেছেন। তার জন্য সেই আমলাদের পেশাগত ক্ষতি হয়েছে। পেশাগত উন্নতির ক্ষেত্রে সমস্যা হয়েছে। সিনিয়র আমলারা দীর্ঘক্ষণ আলোচনায় অংশ নিয়েছেন, তা অভূতপূর্ব হিসেবে আখ্যা দেন ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। বেসরকারি খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তারা বিভিন্ন প্রকল্পের ব্যবচ্ছেদ করেছেন, এটাকে পরিবর্তনের ইঙ্গিত বলে মনে করেন তিনি।
আমলাদের পেশাগত সমিতিগুলো কেন সুরক্ষা দিতে পারেনি, শ্বেতপত্র কমিটির এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেছেন, আমলাতন্ত্রের পেশাগত কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সংগঠনগুলোর দলীয়করণ করা হয়েছিল। সংগঠনের নেতারা সুবিধাবাদী রাজনীতির অংশ হয়ে গিয়েছিলেন। ফলে যৌথভাবে ভূমিকা পালনের অবকাশ ছিল না।

প্রকল্পের মাধ্যমে যে সরকারি অর্থের লুণ্ঠন হয়েছে, তাতে উন্নয়ন প্রশাসনের কী ভূমিকা ছিল- শ্বেতপত্র কমিটির এ প্রশ্নের উত্তরে আমলারা বলেন, অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবের মুখে পড়তে হয়েছে। প্রকল্প প্রণয়নের ক্ষেত্রে গাফিলতি থাকায় প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বেড়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাইপ্রক্রিয়ায় দুর্বলতা ছিল। অনেক ক্ষেত্রে আবার ইচ্ছা করে দুর্বল প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। অনেক প্রকল্প ভুলভাবে টেকসই দেখানো হয়েছে।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়ন প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের ত্রিমুখী সংযোগের কারণে দুর্নীতি হয়েছে।
বৈঠকে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়েছে, যেমন হাইটেক পার্ক, কর্ণফুলী টানেল, জ্বালানি খাত, সামাজিক সুরক্ষা, রাজস্ব সংগ্রহ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা। ব্যাংকব্যবস্থায় সরকারের ভূমিকা ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগ নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT