পাচার হওয়া টাকা ফেরতের সুযোগ বাতিল প্রয়োজন
প্রকাশিত : ১০:২৪ অপরাহ্ণ, ২০ জুন ২০২২ সোমবার ১৮৩ বার পঠিত
দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক খাতে বেশ কয়েকটি দুর্বলতা চিহ্নিত করে অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বিদেশ থেকে পাচার করা টাকা সাত শতাংশ কর দিয়ে আনার সুবিধা সংক্রান্ত বাজেট প্রস্তাব বাতিল করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে। তারা জানান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা খাতে কম বরাদ্দ, ঋণের সুদ পরিশোধের হার বাড়তে থাকলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
অভ্যন্তরীণ খাত থেকে সরকারের প্রায় ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব কার্যকর হলে বেসরকারি ও ব্যক্তি খাতে ঋণ গ্রহণের সুযোগ কমে যাবে। এতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা জরুরি। এ খাতে বরাদ্দ জিডিপির তুলনায় না বেড়ে বরং কমেছে। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় এই বরাদ্দ বৃদ্ধি প্রয়োজন ছিল।
রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) এবং পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত বাজেট-পরবর্তী আলোচনা সভায় রোববার বক্তারা এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। সেমিনারে ‘বাংলাদেশ ফ্রোম ভার্নালিবিলিটি টু রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড র্যাপিড ইনক্লুসিভ ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই-এর পরিচালক ড. আব্দুর রাজ্জাক।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এক সময় বাংলাদেশের যে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ছিল তা দিয়ে দেড় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর ক্ষমতা ছিল। বর্তমানে যা আছে, তা দিয়ে পাঁচ থেকে ছয় মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাস্থ্য খাতে কম বরাদ্দের কথা বলি। কিন্তু এ খাতে আমাদের অগ্রগতি ভারত, পাাকিস্তানের তুলনায় ভালো।
পিআরআই চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার বলেন, কম রাজস্ব আদায় আগামী অর্থবছরের বাজেটের প্রধান চ্যালেঞ্জ। তা মোকাবিলায় করনেট বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে কর ফাঁকি রোধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, একটি দেশ যতই ধনী হোক, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ রাখতে হয়। কারণ এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা হয়। সরকারের মাত্রাতিরিক্ত অভ্যন্তরীণ ঋণের কারণে ব্যাংকের তারল্য কমে যেতে পারে, যা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহে বাধা তৈরি করবে। এছাড়া ব্যাংকে ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশে রাখা, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়া, রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের কর আদায়ে মাত্রাতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়রানি বাড়ার সুযোগ বাড়াসহ বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি বাস্তবতা ও গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যবান্ধব যেসব কর্মসূচি চলমান আছে সেগুলো বরাদ্দ অব্যাহত রাখতে হবে। ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি এবং ওপেন মার্কেট সেলে (ওএমএস) বরাদ্দ কমেছে। এটা খুবই স্পর্শকাতর। এখনো সময় আছে বাজেট সংশোধন করে এসব খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।