বুধবার ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পরিত্যক্ত ভবন ও গোডাউনে রাতযাপন

প্রকাশিত : ০৭:০৮ পূর্বাহ্ণ, ২৯ অক্টোবর ২০২২ শনিবার ৫৯ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

রংপুর বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার ভোর থেকে বন্ধ গণপরিবহণ। তাই ধর্মঘটের বাধা পেরিয়ে দুদিন আগে থেকেই রংপুর বিভাগের ৮ জেলার নেতাকর্মীরা সমাবেশ অভিমুখে যাত্রা করেন। কিন্তু রংপুরে থাকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় শহরতলির বিভিন্ন পরিত্যক্ত ভবন, গোডাউন ও ফাঁকা মাঠে শামিয়ানা টাঙিয়ে রাতযাপন করেন তারা। শুকনো খাবার ও দিনের বেলা খিচুড়ি রান্না করে তাদের খাওয়ানো হয়।

বৃহস্পতিবার রাতেই ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও দিনাজপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম থেকে নেতাকর্মীরা ট্রাক, পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেলে করে সমাবেশস্থলে আসেন। বাস বন্ধের ঘোষণায় অনেক স্থান থেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা গণসমাবেশের একদিন আগেই রংপুর এসে পৌঁছান।

শুক্রবার শহরের আশপাশে বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায় অনেক জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরা খোলা আকাশের নিচে কিংবা পুরোনো ভবন, গোডাইনে রাতযাপন করেন। ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গি, হরিপুর থেকে প্রায় তিন হাজার নেতাকর্মী শহরের বানিয়াপাড়া উত্তর স্কুলের পেছনে পরিত্যক্ত ভবন ও সামনের মাঠে অবস্থান নিতে গেছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাস, মিনিবাস, ট্রাকে চড়ে রওয়ানা দেন তারা। তাদের সঙ্গে ছিল শুকনা খাবার।

ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক প্রচার সম্পাদক মো. আলমের সঙ্গে কথা হয় উত্তর স্কুলের সামনে। সড়কের পাশের কাঁচা ঘাসে বসে ছিলেন তিনি। আলাপকালে সত্তরোর্ধ্ব আলম বলেন, মিনিবাস করে দেড় হাজার নেতাকর্মী এসেছেন। সকালে রুটি কলা খেয়েছেন। ভেতরে গিয়ে দেখা যায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী, কেউ মাঠে বসে আছেন। কেউ ভবনের ভেতরে চাদর ও চট বিছিয়ে শুয়ে আছেন। কেউ টিউবওয়েলে গোসল করছেন। দুপুরে সেখানে খিচুড়ি রান্না করা হয়। জুমার নামাজের পর লঙ্গরখানার মতো নেতাকর্মীদের খিচুড়ি খেতে দেওয়া হয়। রংপুর থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার দূরে বালিয়াডাঙ্গি ইউনিয়ন থেকে আসা বিএনপির সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, অনেক কষ্ট করে রাত ১২টায় এসেছেন। নিজে কিছু ভাড়া দিয়েছেন, দল থেকেও কিছু দেওয়া হয়েছে। এভাবে টাকা জোগাড় করে নেতাকর্মীরা আসছেন।

পঞ্চগড় থেকে কয়েক ধাপে রংপুরে আসেন নেতাকর্মীরা। পঞ্চগড়ের বোদা ও দেবীগঞ্জ থেকে কয়েকশ নেতাকর্মী সমাবেশস্থলের পাশে রাধাবল্লভ এলাকায় প্রয়াত বিএনপি নেতা মসিউর রহমান যাদু মিয়ার পরিত্যক্ত বাড়িতে অবস্থান করেন। উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন শামীম বলেন, তার নেতৃত্বে প্রায় আড়াইশ নেতা-কর্মী বৃহস্পতিবার রাত ২টা রংপুরে আসেন। প্রথমে তারা বিডিআর গেটের কাছাকাছি অবস্থান নিলে পুলিশ সরিয়ে দেয়। পরে জেলা নেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা এখানে যেতে বলেন।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সমাবেশে আসতে তারা গাড়ি ভাড়া করেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানানো হয় গাড়ি যাবে না। তারপর ট্রাক করে কিছুদূর এলে আটকে দেওয়া হয়। পরে কয়েকটি পিকআপে চড়ে রংপুরে আসেন।

দিনাজপুর জেলা থেকে শুক্রবার বিকালে কয়েকশ নেতাকর্মী নিয়ে সমাবেশের উদ্দেশে রওয়ানা হন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসনা হেনা হীরা। মোটরসাইকেল ও পিকআপে করে তার নেতৃত্বে নানা বাধা পেরিয়ে রাতে রংপুরে পৌঁছান। থাকার জায়গায় না পেয়ে তারা সরাসরি সমাবেশের মাঠে অবস্থান নেন। সেখানেই তারা রাতযাপন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতাকর্মীরাও সারারাত সমাবেশের মাঠেই ছিলেন।

হাসনা হেনা হীরা বলেন, অনেক বাধা উপেক্ষা করে তারা সমাবেশে এসেছেন। কোনো বাধাই আমাদের আটকাতে পারেনি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেতাকর্মীরা যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আছে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



এই বিভাগের জনপ্রিয়

© ২০২৩ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT