মঙ্গলবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

‘দেশের স্বার্থ ও অর্থনৈতিক লাভ দেখেই কোনো জোটে যাবে বাংলাদেশ’

প্রকাশিত : ১০:০৫ অপরাহ্ণ, ১৬ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার ১০৬ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছেন, বিশ্বে বিভিন্ন জোট ও ফোরাম গঠিত হচ্ছে। কৌশলগত অবস্থান, সমৃদ্ধ জনশক্তি সুবিধা এবং একটি শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার দাবা বোর্ডে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় করে তুলেছে। যারা কোনো ক্ষতি করতে চায় না এবং যারা নিজেদের আক্রমণাত্মক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের সম্পদ ব্যবহার করতে চায় না তাদের সবার সঙ্গে যুক্ত হতে বাংলাদেশ প্রস্তুত। তবে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে অর্থনৈতিক লাভের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জোট ও ফোরামে সম্পৃক্ত হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে (বিআইআইএসএস) বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

‘পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক ব্যবস্থা: বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করা’ শীর্ষক এ হাইব্রিড সেমিনার উদ্ধোধনও করেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইআইএসএসর চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। স্বাগত জানান সংস্থার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিদ্যমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, বিশ্ব ব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান বহুমুখীতা বাংলাদেশের জন্য কিছু সুবিধা বয়ে আনছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখেছে। আঞ্চলিক বহুপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করতে ও রাষ্ট্রগুলোতে উদীয়মান প্রতিযোগিতামূলক বিভাজনের ঝুঁকি কমাতে বাংলাদেশ তার প্রতিবেশি এবং বিশ্বের পরাশক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ভাল সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে।

তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ ও ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের অনেক দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশ্ব একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে চলেছে। আমরাও সেই চ্যালেঞ্জের বাইরে নই।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর মতই বিশ্বাস করে ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য শান্তি অপরিহার্য। তাই বাংলাদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার সুনাম সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিতে দিন। গর্ব ও সম্মান নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল দেশ। এদেশের জনগণ উন্নত নৈতিকতার ধারক ও বাহক। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে মহামারি পর্যন্ত, বন্যা থেকে খরা পর্যন্ত, আমাদের সাহস ও সহনশীলতা দেখিয়েছি এবং আমরা বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেছি। বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে এখন উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ধাবিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আগামী দিনের যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাসী। তাই আমরা ক্রমাগত আন্তর্জাতিক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করি। অন্যের মুখাপেক্ষী হিসেবে নয়, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সঙ্গে তার নিজের স্বার্থে সম্পৃক্ত। আমরা ‘প্রথম যুক্তি নীতিতে’ বিশ্বাসী এবং পারস্পরিক অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য অংশীদারিত্বে বিশ্বাসী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমারের ১১ লাখ নির্যাতিত জাতিগত সংখ্যালঘুকে আশ্রয় দিয়ে আবারও বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যে, সবার উপরে মানবতা। শেখ হাসিনাকে সাধুবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, আগামী এক সপ্তাহ পরেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে। পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও অনেক বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে এ সেতু আমরা গড়তে সক্ষম হয়েছি।

এ সময় রাষ্ট্রদূত কাজী ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, বৈশ্বিক পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রেখে রপ্তানি নির্ভর বাজার ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন প্রবাহমান রাখার বিষয়গুলোর উপর সর্বোচ্চ আধিকার দেওয়া জরুরি। এজন্য বাংলাদেশকে খাদ্য ও পরিবেশগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভ্যন্তরীণ খাদোৎপাদন বৃদ্ধি এবং যথাযথভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান তার বক্তব্যে বিশ্ব ব্যবস্থার পরিবর্তনশীলতার ধরণ সম্পর্কে তুলে ধরেন এবং শক্তিধর রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে বিরাজমান রেষারেষি কমিয়ে আনতে উদীয়মান বাস্তবতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করার প্রতি গুরুতারোপ করেন।

এতে ওয়ার্কিং সেশনে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত শমসের মুবিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ-উজ-জামান, জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচিরর কান্ট্রি ইকনোমিস্ট ও নীতি কৌশলগত উপদেষ্টা বিভাগের প্রধান ড. নাজনীন আহমেদ, বিআইআইএসএসের গবেষণা ফেলো ড. রাজিয়া সুলতানা, গবেষণা ফেলো আ স ম তারেক হাসান শিমুল। এছাড়া কয়েকজন অংশগ্রহণকারী মতামত তুলে ধরেন।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



© ২০২৩ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT