সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুবাইয়ে জুয়েলার্সে তালা নজরদারিতে আরাভ

প্রকাশিত : ০৭:২১ পূর্বাহ্ণ, ২২ মার্চ ২০২৩ বুধবার ১০২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির পর দুবাইয়ে ব্যবসাপাতি গুটিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করছেন পুলিশ হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম আরাভ। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর মালিকানাধীন আরাভ জুয়েলার্স বন্ধ দেখা গেছে। এর আগে দোকান থেকে গহনাপাতি সরিয়ে নেন তাঁর লোকজন। তবে তিনি পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত দূতাবাস। এদিকে, ইন্টারপোলের কাছ থেকে বার্তা পাওয়ার পর দুবাই পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকলেও বিতর্কিত এই ব্যবসায়ীকে ফেরাতে কোনো সমস্যা হবে না। তাঁকে ফেরাতে দুবাই যাওয়ার কথা ভাবছে পুলিশের একটি দল। গতকাল দুপুর থেকে গুঞ্জন ছড়ায়– তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে তিনি গ্রেপ্তার হননি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, প্রতারক আরাভ এখন দুবাই পুলিশের নজরদারিতে। এ তথ্য জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর। তিনি বলেন, ভারতের পাসপোর্ট বাতিলের বিষয়ে আমাদের কাছে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। তবে তিনি দুবাই পুলিশের নজরদারিতে রয়েছেন।

একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, বিতর্কিত এই ব্যবসায়ীকে দেশে ফেরাতে কোনো সমস্যা নেই।

কারণ, আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা হিসেবে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ কারও বিরুদ্ধে থাকলে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির প্রয়োজন হয় না। তবে আরাভকে ফেরানোর আগে তিনি বাংলাদেশি এটা পুলিশকে প্রমাণ করতে হবে। এরই মধ্যে তিনি যে বাংলাদেশি নাগরিক এর সপক্ষে নানা তথ্য-উপাত্ত ইন্টারপোল ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে সরকার। কারণ, আরাভ বাংলাদেশি নাগরিক হলেও অবৈধভাবে তৈরি করা ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। এমনকি তাঁর কাছে এখনও কোনো বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়া যায়নি বলছেন দেশের গোয়েন্দারা। গ্রেপ্তারের হলে ভারতীয় পাসপোর্টধারী আরাভকে দেশে ফেরাতে যাতে কোনো ধরনের জটিলতা তৈরি না হয়, সে ব্যাপারে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ। গত কয়েক দিন ধরে আরাভ নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলে আসছেন, দেশের কোথায় তাঁর বাড়ি। বনানীতে বাংলাদেশের এক পুলিশ সদস্যকে হত্যার পর তাঁর ভূমিকা কী ছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ বিদেশি গোয়েন্দাদের হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ। গতকাল এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, দুবাইয়ে পালিয়ে থাকা আরাভ খান এখনও সেখানে আটক হননি। দেশের আসামি কোনো বন্ধু রাষ্ট্রে গিয়ে যদি রাজনৈতিক আশ্রয়ে না থাকে, যদি কোনো কারণে তাঁর বুদ্ধির সীমাবদ্ধার কারণে নিজেকে নিজেই চিহ্নিত করেন, তাহলে মুক্ত থাকার কোনো পরিস্থিতি আর থাকে না। তিনি পালাতে পারবেন না।

পুলিশ সদরদপ্তরের মুখপাত্র এআইজি মনজুর রহমান বলেন, আরাভ গ্রেপ্তার হয়েছে– এ ধরনের তথ্য আমাদের কাছে নেই। ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করেছে, এটি নিশ্চিত।

দুবাইয়ে বাংলাদেশি কমিউনিটির একাধিক বাসিন্দা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আরাভকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। নিজের গতিবিধি সীমিত করেছেন। আরাভ এখন গাঢাকা দিয়ে আছেন। তবে পাসপোর্টে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ভিসা থাকায় যে কোনো সময় দুবাই ছাড়তে পারেন– এমন আশঙ্কা করছেন অনেকে। বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, ভিসা থাকলেও আরাভ যাতে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারেন, এর ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় তিনি ভারতের ভিসা নিয়েছেন, সেটি তদন্ত করছেন দেশটির গোয়েন্দারা।

পুলিশের ডিআইজি (অপারেশন্স) হায়দার আলী খান বলেন, ইন্টারপোলের রেড নোটিশ থাকলে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকলেও যে কোনো দেশ থেকে আসামিকে নিজ দেশে ফেরত আনা যায়। আরাভকে গ্রেপ্তার করা গেলে ফেরানো নিয়ে আশা করি তেমন জটিলতা হবে না। এর আগে আওয়ামী লীগ নেতা টিপু হত্যা মামলার আসামিকেও বিদেশ থেকে ফেরত আনা হয়েছে।

সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু : পুলিশ পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম খানের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকাল ঢাকা প্রথম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে জেরার মধ্য দিয়ে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। এ নিয়ে মামলাটিতে ৩৮ জন সাক্ষীর মধ্য দিয়ে একজনের সাক্ষ্য নেওয়া হলো। জেরা শেষে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৪ জুন ধার্য করেন।

কেয়া মালয়েশিয়ায় : মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, আরাভ খানের প্রথম স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়া। তিনি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ও মনোয়ারা খাতুন দম্পতির মেয়ে। কেয়াও পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার আসামি। তবে তিনি আদালত থেকে জামিনের পর এখন পলাতক। মামলার আসামি হওয়ার পর কেয়াকে ডিভোর্স দেন আরাভ।

কেয়ার বাবা জানান, কয়েক বছর কারাগারে থাকার পর গত বছর জামিনে বের হয় কেয়া। এর পর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের শাহিন নামের এক যুবককে বিয়ে করে। এর পরই সে স্বামীর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় চলে গেছে।
গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মামলাটি ব্যাপক আলোচনায় আসার পর কয়েকদিন আগে ডিএমপি পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) থেকে কেয়ার খোঁজখবর নিতে একটি চিঠি দিয়েছে। এখন তা অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT