শনিবার ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছুটি শেষে নগরে ফিরতে পথে পথে ভোগান্তি

প্রকাশিত : ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ, ১৭ জুলাই ২০২২ রবিবার ১৬৭ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ঈদের ছুটি শেষে গ্রাম থেকে নগরে ফিরতে লাখো মানুষ আগের দিনের মতো গতকাল শনিবারও দুর্ভোগে পড়েন। মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও যানজট, অসহনীয় গরম, বাসে বাড়তি ভাড়া, খোলা ট্রাক-পিকআপে ফেরা, ফেরিঘাটে অপেক্ষা এবং গাদাগাদি ভিড়ে ঠাসা ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছেন কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীরা।

১০ জুলাই ঈদের পর গত মঙ্গলবার থেকে অফিস-আদালত খুলেছে। পাঁচ দিন পর গতকালও রাজধানীর সড়ক ছিল ফাঁকা। ধারণা করা হচ্ছে, আজ রোববার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে ফের চেনারূপে ফিরবে নগরী। তাই কর্মস্থলে ফিরতে গতকাল শহরমুখী যাত্রীর ঢল ছিল মহাসড়ক, ঘাট, লঞ্চ ও ট্রেনে।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, আগের দিনের মতো গতকালও যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্বপ্রান্তে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট ছিল। তবে সেতু থেকে ঢাকামুখী মহাসড়কের প্রায় ৩০ কিলোমিটারে দিনভরই ধীরগতিতে যান চলাচল করেছে। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত ৭৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে ১০-১২ ঘণ্টা লেগেছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আলাদা দুই দুর্ঘটনায় যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় গাড়িজট আরও বাড়ে।

ঢাকার প্রবেশমুখ গাবতলী, টঙ্গী, কাঁচপুরেও রাজধানীমুখী গাড়ির তীব্র চাপ ছিল। পদ্মা সেতু হয়ে আসা গাড়ির চাপ ছিল হানিফ ফ্লাইওভারে। শনিবার দুপুর ১টার দিকে দেখা যায়, ফ্লাইওভার থেকে চানখাঁরপুল, গুলিস্তান, সায়েদাবাদে নামার র‌্যাম্পের টোল প্লাজায় গাড়ির দীর্ঘ সারি। বাগেরহাট থেকে প্রাইভেটকারে আসা মনতাজুল হক জানান, পদ্মা সেতু পার হয়ে এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় যানজটে আটকে ছিলেন আধাঘণ্টা। হানিফ ফ্লাইওভারে দেড় ঘণ্টা যানজটে পড়েন। যানজটের কারণে পদ্মার সুফল পাচ্ছেন না।

ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট না থাকলেও গাড়ির চাপ ছিল। পরিবহন সংকটে হাজার হাজার যাত্রী ট্রাকে-পিকআপে চড়ে ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে যাত্রা করেছেন। ঢাকামুখী বাসে ভাড়াও ছিল বেশি।

ভোগান্তি ট্রেনেও: ঈদের আগে যাত্রীর চাপে ঢাকা থেকে ট্রেন ছাড়তে দেরি করেছে। ঈদের পর ঢাকায় ট্রেন ফিরছে দেরিতে। নীলফামারীর চিলাহাটী থেকে ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’ ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকায় ফেরে। ৬টা ৪০ মিনিটে কমলাপুর থেকে ফের চিলাহাটীর উদ্দেশে যাত্রা করে। গতকাল সকাল ১১টায়ও ফেরেনি ট্রেনটি। প্রায় সাত ঘণ্টা বিলম্বে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ট্রেনটি ঢাকায় আসে। রংপুর বিভাগের আট জেলা থেকে আসা সব ট্রেনই শনিবার দেরিতে ফিরেছে ঢাকায়।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, ঈদের আগে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনে ছিল গাদাগাদি ভিড়। এখন ঢাকায় ফেরা ট্রেনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ছাদে উঠছেন হাজারো যাত্রী। সে কারণে ট্রেন নির্দিষ্ট গতিতে চলতে পারছে না। যাত্রীদের নিরাপত্তায় ধীরগতিতে ট্রেন চলায় গন্তব্যে দেরিতে পৌঁছাচ্ছে।

বিকেল ৩টায় কমলাপুরে আসে ‘হাওর এক্সপ্রেস’। মোহনগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ হয়ে আসা এ ট্রেনটির যাত্রী নাজমুল ইসলাম জানান, তাপানুকূল বগিতেও শতাধিত যাত্রী দাঁড়িয়ে এসেছেন। রেলের কর্মীরা টাকা নিয়ে এসব যাত্রী তুলেছেন। প্রচণ্ড গরমে ট্রেনের ভেতরে টেকা যাচ্ছিল না।

ভোগান্তি বেশি ঘাটে, নদী পার হয়ে বাসে বাড়তি ভাড়া :পদ্মা সেতু চালুর পর লঞ্চে যাত্রী সংকট দেখা দিলেও বরিশাল ব্যুরো ও পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল দুই শহরের লঞ্চ টার্মিনালে ছিল যাত্রীর উপচে পড়া ভিড়।

বরিশাল নগরের নথুল্লাবাদের বাস টার্মিনালে ছিল প্রায় এক কিলোমিটার যানজট। বিআরটিসি বাস ডিপোতে টিকিটের জন্য প্রায় আধা কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন ছিল যাত্রীদের। বরিশাল থেকে ১৬টি বড় লঞ্চ ছেড়েছে গতকাল।

সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মজিবর রহমান বলেন, প্রতিটি লঞ্চে আড়াই-তিন হাজার যাত্রী যাচ্ছেন।

দক্ষিণবঙ্গ থেকে দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে পদ্মা পার হয়ে আসা যাত্রীরা আগের দিনের মতোই ভুগেছেন। ফেরি পার হতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। নদীর এপারে পাটুরিয়ায় পৌঁছে পড়তে হয়েছে পরিবহন সংকটে। ঢাকার বাসভাড়া ১৫০ টাকা হলেও যাত্রীপ্রতি ৪০০-৬০০ টাকা আদায় করা হয়েছে বিভিন্ন পরিবহনের বাসে। ট্রাকে-পিকআপে জনপ্রতি একশ-দেড়শ টাকায় যাত্রী তোলা হয়।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT