শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চোরাচালানের সোনা বের হচ্ছে বিমানবন্দরের ক্যাটারিং দিয়েc

প্রকাশিত : ০৮:৩২ পূর্বাহ্ণ, ৮ জুন ২০২২ বুধবার ১৩৬ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

গত পাঁচ মাসে বিমানবন্দর থেকে ২০ মণেরও বেশি সোনা উদ্ধার হয়েছে। যাত্রী ছাড়াও এসব চোরাচালানে জড়িত ছিলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) অসাধু কর্মীরা। বিভিন্ন সময় হাতেনাতে আটক হয়েছেন তারা। আগে বিমানের প্রকৌশল শাখার কর্মীরা হ্যাঙ্গার গেটের মাধ্যমে চোরাচালানের সোনা বের করে নিয়ে আসতেন বলে অভিযোগ ছিল। হ্যাঙ্গার গেটে নিরাপত্তা জোরদার হওয়ায় এখন চোরাচালানের সোনা বের করার নিরাপদ রুট হয়ে দাঁড়িয়েছে বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টার (বিএফসিসি)।

২৫ মে বিএফসিসি’র প্যান্ট্রিম্যান মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ আকন্দের কাছ থেকে ৮ কেজি সোনার বার উদ্ধার করে ঢাকা কাস্টম হাউস। যদিও ওই কর্মীকে আটক করতে দিনভর নানা প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয়েছিল কাস্টম কর্মকর্তাদের।

সেদিন দুপরে বিএফসিসি’তে প্রবেশ করতেই বাধার মুখে পড়েন কাস্টম কর্মকর্তারা। আজিজ আকন্দের কাছে সোনা থাকার পরও তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসেন সেখানকার কর্মকর্তারা। পরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার চাপের মুখে প্রায় ৮ ঘণ্টা পর তাকে কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উত্তর পাশে বিমানবন্দরের সঙ্গে লাগোয়া ভবনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ক্যাটারিং সেন্টার। যেখানে বিমানের ফ্লাইটের খাবার রান্না হয়। সেখান থেকেই ফ্লাইটে খাবার সরবরাহ করা হয়।

দেখা গেছে, বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত থাকায় বিএফসিসি থেকে বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোন এলাকায় প্রবেশ করা যায়। বিএফসিসি’র কর্মীদের প্রবেশে বিমানের নিরাপত্তাকর্মীদের তল্লাশি থাকলেও সেখানে এভিয়েশন সিকিউরিটি কিংবা কাস্টমসের তল্লাশি নেই। ফলে বিভিন্ন সময়ে বিএফসিসি’র কর্মী ও বিএফসিসির গাড়ি থেকে সোনা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। বিএফসিসি থেকে বিমানবন্দরে প্রবেশের সময়ও যথাযথ তল্লাশি হয় না বলে অভিযোগ আছে।

ঢাকা কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) মো. সানোয়ারুল কবীর বলেন, বিএফিসিসি’তে প্রবেশ ও বিএফসিসি থেকে বিমানবন্দরে যাওয়ার পথে বিমানের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে। তবে সেটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয় না বলেই চোরাচালানের ঘটনা ঘটছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালাতে গেলেও বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে চোরাচালানের ঘটনায় লোক দেখানো তদন্ত কমিটি করে বিমান। আটক হওয়া কর্মী ছাড়া কাউকেই সনাক্ত করতে পারেনি ওই কমিটি। নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থাও নেয়নি বিমান কর্তৃপক্ষ।

তবে বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে বিমানের প্রকৌশল বিভাগ ও বিএফসিসির কর্মীদের চোরাচালানে জড়িত থাকার তথ্য উঠে এসেছে। বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সহায়তায় স্বর্ণ বিমানে উঠিয়ে দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে তা বিমানে লুকানো হয়। যাত্রীরা নেমে যাওয়ার পর বিমানের লোকজন ছাড়া অন্য কারও উড়োজাহাজে ওঠার সুযোগ নেই। তাই চোরাচালানে বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে অনেকবার।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী এবং বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। সম্প্রতি আবু সালেহ মোস্তাফা কামাল বলেছেন, এটা এক দিনে বন্ধ করতে পারবো না। তবে এর আগে চোরাচালানে জড়িত ১৩ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

বিমানকর্মীদের বিমানবন্দরে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় তল্লাশি বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করছেন কাস্টম কর্মকর্তারা। ঢাকা কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) মো. সানোয়ারুল কবীর বলেন, ‘কেউই সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময়ও তল্লাশি বাড়াতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, বিএফসিসি’র বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। কেউ যেন তল্লাশি ছাড়া বিমানবন্দরে ঢুকতে ও বের না হতে পারে তা নিশ্চিত করা হবে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT