শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

চুক্তি হতো ১০ লাখের, কিডনি নেওয়ার পর দিত ১ লাখ

প্রকাশিত : ১০:২৪ অপরাহ্ণ, ৩১ মে ২০২২ মঙ্গলবার ১৫৬ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

গোপনে হতদরিদ্র ঋণগ্রস্ত ও নিরীহ মানুষকে টার্গেট করে কিডনি বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ ও ৮-১০ লাখ টাকার চুক্তি করত। কিডনি নেওয়ার পর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টাকা না দিয়ে বিমানবন্দরে তাদের হাতে মাত্র এক থেকে দুই লাখ টাকা ধরিয়ে দেয় অবৈধ কিডনি ক্রয়-বিক্রয় দালাল চক্র।

এ চক্রের দ্বিতীয় স্তরের মূল হোতা আব্দুল গাফ্ফার সরকার (৪৭) ও তার সহযোগী নূর আফতাবকে (৩৮) গ্রেফতারের পর মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।

জয়পুরহাটে অবৈধ কিডনি ক্রয়-বিক্রয় দালাল চক্রের দ্বিতীয় স্তরের মূলহোতা আব্দুল গাফ্ফার সরকার ও তার সহযোগী নূর আফতাবকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। সোমবার রাতে আব্দুল গাফ্ফার সরকারকে ঢাকার মিরপুর থেকে ও তার সহযোগী নূর আফতাবকে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার আব্দুল গাফ্ফার সরকার জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার মোসলেমগঞ্জ-টাকাহুত গ্রামের মৃত বেলাল সরকারের ছেলে ও নূর আফতাব জেলার একই উপজেলার জয়পুর-বহুতি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে।

এ নিয়ে এই দালাল চক্রের গ্রেফতারকৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯ জনে। এর আগে গত ১৪ মে এ চক্রের ৭ জনকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ।

গোপন সূত্রে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে জয়পুরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকস দল সোমবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ঢাকার মিরপুর থেকে আব্দুল গাফ্ফার সরকারকে গ্রেফতার করে। তিনি ঢাকার মিরপুরের একটি গার্মেন্টসে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে চাকরির আড়ালে ঢাকায় অবস্থান করে গোপনে কিডনি ক্রয়-বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। অপরদিকে একই রাতে তার সহযোগী নূর আফতাবকে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত এসব দালাল দীর্ঘদিন ধরে জয়পুরহাটসহ পার্শ্ববর্তী নওগাঁ, বগুড়া, গাইবান্ধা, দিনাজপুর জেলার পল্লী এলাকার নিরীহ, ঋণগ্রস্ত ও হতদরিদ্র অশিক্ষিত নারী-পুরুষদের মোটা অংকের টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য করে আসছিলেন।

মঙ্গলবার দুপুরে জয়পুরহাট জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, মোশফেকুর রহমান, ইশতিয়াক হোসেনসহ ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার (এসপি) বলেন, সংঘবদ্ধ এ দালাল চক্রের সদস্যরা বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদানের লোভ দেখিয়ে দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে গোপনে নিরীহ মানুষকে তাদের কিডনি বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করে এবং কিডনি ট্রান্সপারেন্ট (প্রতিস্থাপন) করার জন্য তাদের গোপনে ঢাকা এবং কাউকে কাউকে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে যায়। কিন্তু কিডনি দেওয়ার পরে তারা ঘোষিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৮-১০ লাখ না দিয়ে বিমানবন্দরে তাদের হাতে মাত্র এক থেকে দুই লাখ টাকা ধরিয়ে দিয়ে সারা জীবনের জন্য অঙ্গহানি ঘটিয়ে (তাদের) দেশে পাঠিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, কিডনিদাতারা অভাবের তাড়নায় অর্থের লোভে বাধ্য হয়ে নিজের অঙ্গ বিক্রি করে প্রতারিত হলেও প্রকৃতপক্ষে লাভবান হচ্ছে সংঘবদ্ধ কিডনি ক্রয়-বিক্রয় চক্রের এসব দালাল। তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ দালালদের একে একে গ্রেফতার করছে পুলিশ।

এ চক্রের গডফাদার (মূলহোতা) কাওছার, আব্দুস সাত্তার, বায়েজিদ, জহুরুল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে থাকলেও তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান ও তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা (এসপি)।

এদিকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপনে নিজেদের মূল্যবান কিডনি বিক্রি করে প্রতারিত হওয়া দরিদ্র কিডনি বিক্রেতাদের অনেককে এখন নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থাবস্থায় নিজ বাড়িতে কর্মক্ষমহীন মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। এমন হতদরিদ্র প্রতারিত কিডনি দাতাদের কয়েকজন (ভিকটিম) প্রেস ব্রিফিংকালে সাংবাদিকদের সামনে তাদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT