সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ ভারতে কমেছে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার, বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে ◈ বিশেষ বিসিএসে ৫০০ ডেন্টাল সার্জন নিয়োগের দাবি, শাহবাগে মানববন্ধন ◈ সারা দেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার ১৪৯২ ◈ সাবেক সেনাসদস্যদের বিক্ষোভ নিয়ে যা জানাল আইএসপিআর ◈ সকাল ৯টার মধ্যে ঢাকাসহ যেসব জেলায় ঝড়সহ বজ্রবৃষ্টির আভাস ◈ উপদেষ্টাকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট, বরখাস্ত হলেন প্রাথমিক শিক্ষক ◈ কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের ৩ নেতা কারাগারে ◈ যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন-সড়ক অবরোধ ◈ টর্নেডোর তাণ্ডবে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্র, প্রাণহানি বেড়ে ২১ ◈ ‘বলেন তো, আপনার স্বামী কয়জন’, মমতাজকে পিপি

চিন্ময় কৃষ্ণ আটক; কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি

প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ণ, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ বুধবার ৫৬ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

বাংলাদেশে ISKCON (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশিয়াসনেস) এর বিশিষ্ট পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আটক দেশের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

একটি সামাজিক মাধ্যমে (এক্স-এ) দেওয়া বিবৃতিতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, “বাংলাদেশে ISKCON মন্দিরের পুরোহিতের আটক এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।” তিনি আরও বলেন, “আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যেন তারা এই বিষয়ে তৎপরতা গ্রহণ করে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে জোরালো দাবি জানায়।”

আটক ও অভিযোগ

চীনময় কৃষ্ণ দাস সোমবার ঢাকার বিমানবন্দর এলাকায় আটক হন এবং তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়। তাকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যেখানে অভিযোগ করা হয়েছে যে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বহনকারী একটি স্ট্যান্ডে একটি পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এই ঘটনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং অত্যধিক অভিযোগ বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

এই আটক বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে, যাদের উপর হামলা ও নিপীড়ন বৃদ্ধি পেয়েছে। এমনকি ধর্মীয় নেতাদের ওপরও হামলার ঘটনা বেড়েছে, যা দেশের ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর আঘাত হিসেবে দেখা যাচ্ছে।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর পরামর্শ

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ISKCON মন্দিরের পুরোহিতের আটক এবং হিন্দু সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান সহিংসতা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, যেন তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে জোরালো দাবি জানায়।”

এছাড়া, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সম্প্রতি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার যে প্রবণতা বাড়ছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং মনে করেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একত্রিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

বাংলাদেশের সংখ্যালঘু কাউন্সিলের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ (BHBCUC), দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু সংগঠন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আটককে তীব্রভাবে নিন্দা করেছে। এই পরিষদের কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক মানিন্দ্র কুমার নাথ বলেন, “আমরা প্রভু চীনময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর আটক এবং তাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার প্রতিবাদ জানাই। সরকারকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে ধর্মীয় নেতারা নির্দ্বিধায় তাদের বিশ্বাস প্রকাশ করতে পারেন।”

ভারতের প্রতিক্রিয়া

ভারতও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আটককে নিন্দা জানিয়েছে এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (MEA) এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “এটি দুঃখজনক যে, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মাধ্যমে বৈধ দাবি তুলে ধরা ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হচ্ছে, আর যারা সহিংসতার মূল হোতা, তারা এখনও মুক্ত রয়েছে।”

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহও এই ঘটনার নিন্দা করেছেন এবং বাংলাদেশের সরকারকে রেডিকাল গোষ্ঠীগুলোর চাপের মধ্যে কাজ করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকার রেডিকালদের চাপের মধ্যে কাজ করছে। তারা মন্দিরগুলো ভাঙছে। আমি ভারতের সরকারকে ধন্যবাদ জানাই যে, তারা এই বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। জাতিসংঘকেও এই পরিস্থিতি নিয়ে সজাগ হতে হবে।”

ধর্মীয় স্বাধীনতার সংকট

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আটক বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছে। কিছু বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠী এই সহিংসতাকে উসকানি দিচ্ছে, যা সরকারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

প্রিয়াঙ্কা গান্ধী সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়ে বলেছেন যে, তাদের পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাধ্য করা উচিত।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা

এখন সময় এসেছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের, বিশেষ করে ভারতের, Bangladesh এর সরকারের প্রতি ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় চাপ সৃষ্টি করার। বাংলাদেশের পরিস্থিতি তীক্ষ্ণ নজরদারি দাবি করছে এবং এই সংকটের সমাধানে যৌথ পদক্ষেপের প্রয়োজন।

বাংলাদেশ কি ধর্মীয় সহিষ্ণুতার পথ অনুসরণ করবে?

চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আটক বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতার ভবিষ্যতের ওপর বড় ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশ তার স্বাধীনতা ও সেক্যুলার মূল্যবোধকে পুনরুদ্ধার করতে পারে কিনা, নাকি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।

বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে ভারত, এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় অবিলম্বে উদ্যোগ নেবে কিনা, তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT