শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৪ঠা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে ফের বেড়েছে পেঁয়াজ ও আলুর দাম

প্রকাশিত : ০৭:৩০ পূর্বাহ্ণ, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ শনিবার ৬১ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ফের অস্থির পেঁয়াজের বাজার। পেঁয়াজের পাশাপাশি বেড়েছে আলুর দামও। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত। ভারতীয় ভালোমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা দরে। খুচরা বাজারে আরও ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে দেশীয় মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত। পাইকারি বাজারে এই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১১০ টাকার বেশি দামে। গত সপ্তাহে আলুর কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা হলেও শুক্রবার আলু বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা থেকে ৭০ টাকা দরে। একইভাবে বাজার শীতকালীন সবজিতে ঠাসা হলেও দাম ঊর্ধ্বমুখী।

ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকার কোনো পণ্যের দাম বাড়ালে ব্যবসায়ীয়রা মিনিটের মধ্যে কার্যকর করে। আর দাম কমালে দিনের পর দিনও কার্যকর হয় না। সরকার নির্ধারিত দাম কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকে। নির্ধারিত দাম বাজারে কার্যকর হয়েছে কিনা, তা যাচাই-বাছাই করার যেন কেউ নেই। সাধারণ মানুষ অসহায় অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বাজারে এখনো যেসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে তা আগের আমদানি করা বা আগের এলসির পেঁয়াজ। কিন্তু আমদানিকারকরা কোনো কারণ ছাড়াই পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সেসব পেঁয়াজের আমদানি ব্যয় কম হলেও আমদানিকারকরা স্থলবন্দর এলাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম দাবি করছেন ১৫৫ টাকা থেকে ১৬০ টাকা। উত্তরঙ্গের স্থলবন্দর থেকে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে বাজারে আনা পর্যন্ত কেজিতে আরও ৫ টাকার মতো খরচ হয়। এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো যদি স্থলবন্দর এলাকায় পেঁয়াজের বাজার মনিটরিং করে তবে পাইকারিতে দাম কমে আসবে।

এদিকে আগের চেয়ে পেঁয়াজের চাহিদাও কমে গেছে। শুক্রবার চাক্তাইয়ের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি গুদামে পেঁয়াজ ভর্তি। তবে ক্রেতা আগের মতো নেই। অনেক গুদাম থেকে পেঁয়াজের বস্তা ফুটপাতেও থরে থরে সাজিয়ে রাখছেন কর্মচারীরা। আগে ক্রেতাদের কোলাহল থাকলেও এখন আগের মতো ক্রেতা নেই। পেঁয়াজ বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। কয়েক দিন ধরে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজকেন্দ্রিক ব্যবসা এবং শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা অনেকটা কমে গেছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল কেজিপ্রতি ১২০-১২৫ টাকায়। এছাড়া দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৯০ টাকায়, বর্তমানে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা থেকে ১১৫ টাকায়। অন্যদিকে খুচরা বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকার বেশি দামে।

খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তদার মহিউদ্দিন কাজল বলেন, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কিছুটা নিুমুখী ছিল। দুদিন ধরে আবারও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আসলে আমাদের দেশে পেঁয়াজের বাজারের দাম বাড়া কিংবা কমা নির্ভর করে চাহিদা ও জোগানের ওপর। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবরে হঠাৎ দাম বেড়ে কয়েকগুণ হয়। এখন দাম বাড়ার বড় কারণ হচ্ছে আমদানিকারকরা পেঁয়াজের দাম বেশি চাচ্ছেন। আমাদের দেশে যে পরিমাণ পেঁয়াজ বাজারে সরবরাহ হচ্ছে, চাহিদা পূরণের জন্য তা যথেষ্ট নয়।

অন্যদিকে, চট্টগ্রামে আলুর বাজার সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হিমাগার থেকে আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও অদৃশ্য কারণে বাড়ছে দাম। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ ও রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদাররা সিন্ডিকেট করে বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন। তারা বাজারে আলুর কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সরকার-নির্ধারিত দামে কোথাও আলু বিক্রি হচ্ছে না। প্রতি কেজি পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে। আর নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা।
খাতুনগঞ্জের আলুর আড়তদার সাইফুল ইসলাম বলেন, আলুর চাহিদা যে হারে বেড়েছে সরবরাহ সেভাবে নেই। এ কারণে আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে। সিন্ডিকেট করে আলু বিক্রির সুযোগ নেই বলে তিনি দাবি করেন।

বাজারদর : চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারগুলোতে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০-৪০ টাকা, ফুলকপি ৭০-৭৫ টাকা, শিম ৮০-১০০ টাকা, করলা ৯০-১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, টমেটো ৮০-৯০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গাজর ৭০-৮০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা কেজি, লালশাক ২০ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। বড় ও মাঝারি আকারের তেলাপিয়া মাছের কেজি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, ছোট তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২১০ টাকা। আকারভেদে পাঙ্গাশ মাছের কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের নলা-রুই মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, বড় আকারের কাতল মাছ ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাবদা মাছ আকারভেদে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০, মাঝারি চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT