খেলা সময়মতো হবে: মান্না

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীনরা দেশের জনগণের সব সাংবিধানিক এবং মৌলিক অধিকার, মত-প্রকাশের স্বাধীনতা, ভোট দেওয়ার অধিকার, এমনকি নিরাপদে বেঁচে থাকার অধিকারও হরণ করেছে। অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেশকে মহাবিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছে। জনগণের রাজনৈতিক সব অধিকার খর্ব করে আওয়ামী সরকার দেশে কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। এই চেষ্টা সফল হবে না। সরকার পতনের খেলাটি সময়মতো খেলা হবে। তখন আর সরকার ক্ষমতায় টিকতে পারবে না।’

বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য।

মান্না বলেন, ‘সরকারের নির্বাহী আদেশে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম। এরপরও বাড়ছে লোডশেডিং, পাওয়া যাচ্ছে না নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস। টাকার মূল্যমান আশঙ্কাজনক অবনমন এবং ডলারের অস্থিতিশীল ও অনিয়ন্ত্রিত মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাড়ছে হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ।’

তিনি বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক ক্ষমতাসীনরা গত ১৪ বছরের শাসনামলে বিরোধী মত, এমনকি গণমাধ্যমকর্মীদের দমনের জন্য নানা কালাকানুন ব্যবহার করে আসছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ২০১৮ সালে ৩৪টি, ২০১৯ সালে ২৩টি, ২০২০ সালে ১৯৭টি এবং ২০২১ সালে ২৩৮টি মামলা হয়। ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী পূর্ববর্তী চার বছরে ৬১১টি মামলায় বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী, সাধারণ জনগণের পাশাপাশি জেলে যেতে হয়েছে ৫৩ সাংবাদিককে। ব্যক্তিগত যন্ত্রে আড়িপাতার মাধ্যমে তারা জনগণের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার সাংবিধানিক অধিকারকে হরণ করবে। ইতোমধ্যে ১৯১টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এই ব্যবস্থায় জনগণের পাশাপাশি গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরতে চায় ক্ষমতাসীনরা।’

মান্না বলেন, ‘২০২১ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে এবারও আমন্ত্রণ পায়নি বাংলাদেশ। এই সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার ৪ দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও মালদ্বীপসহ বিশ্বের ১১১টি দেশ আমন্ত্রণ পেয়েছে। দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আরও একধাপ অবনমন হয়েছে। বর্তমান ক্ষমতাসীনদের গত ১৪ বছরের শাসনামলে দেশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। মেগা প্রকল্পের নামে মেগা লুটের মাধ্যমে তারা দেশকে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের সঞ্চালনায় আলোচনায় আরও অংশ নেন- আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক এবং মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোমিনুল ইসলাম, জিন্নুর চৌধুরী দিপু প্রমুখ। সভার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার।