শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩রা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
◈ ‘কোথায় থাকব, কে আশ্রয় দেবে জানি না’ ◈ সিরিজ জয়ে চোখ বাংলাদেশের ◈ চাকরি জীবনে একবার গুরুদণ্ড পেলে ওসি হতে পারবেন না ◈ পাহাড়ে ফলের নতুন ভান্ডার ◈ সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান ভারতের ◈ মোহাম্মদপুরের গ্যাং প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৪২ ◈ সৌদিতে নারী যাত্রীদের জন্য বিশেষ সেবা আনছে উবার ◈ নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে গত মাসে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে জয়ী হয়েছেন জোহরান মামদানি। এটি শহরটির অনেক মানুষের জন্য আনন্দের খবর হলেও কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পড়েছে আবাসন ব্যাবসায়ীদের। তারা ক্ষতির ঝুঁকি দেখছেন। এরই মধ্যে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন খাতসংশ্লিষ্ট অনেকে। তারা বলছেন, পরিবর্তনশীল এ সময়ে গ্রাহকরা ঝুঁকি নিতে চাচ্ছেন না; তারা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। নিউইয়র্কে আবাসন ব্যবসার ব্রোকার জে বাত্রা জানান, তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ম্যানহাটানে লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তির দুই পৃথক ক্লায়েন্ট বাত্রাকে জানিয়েছেন, তারা নিউইয়র্কের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে চান। বাত্রার উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক ধনী ও বিলাসবহুল ক্রেতা একটু বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন। মামদানি যত বেশি জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন, ততই তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অনেককে বলতে শোনা যাচ্ছে– ‘হায়, শহরটি কোথায় যাচ্ছে!’ ৩৩ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক মামদানি গত জুনের শেষ দিকে নিউইয়র্কের মেয়র প্রাইমারিতে জয়লাভ করেন। এর পর থেকে বেশ কয়েকজন পেশাদার আবাসন ব্যবসায়ী সিএনএনকে জানান, উচ্চস্তরের ক্রেতারা তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ বন্ধ করতে শুরু করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত নীতিগুলোর সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অনিশ্চিত। তারা আরও বলেন, মামদানির জয়ের ফলে তাঁর রাজনীতির সঙ্গে একমত না হওয়া নিউইয়র্কের কিছু ধনী বাসিন্দা শহর ত্যাগের পরিকল্পনা ত্বরান্বিত করেছেন। মামদানি ১০ লাখ ডলারের বেশি আয়কারী নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ওপর ২ শতাংশ হারে কর আরোপের প্রস্তাব করেছেন। তাঁর কাছে আবাসন প্রস্তাবের একটি তালিকাও আছে, যার মধ্যে রয়েছে– ভাড়া স্থির করার প্রতিশ্রুতি, ব্যাপক পাবলিক হাউজিং নির্মাণ ও সংস্কার এবং কঠোর তদারকি। মার্কিন গণমাধ্যমটি বলছে, মামদানি মেয়র হলেও তাঁর প্রস্তাবগুলো বাস্তবে পরিণত নাও হতে পারে। এর অনেক কারণ রয়েছে। তবুও তাঁর প্রাথমিক জয় বাত্রার কিছু ক্লায়েন্টকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কেউই আসলে তাদের কর বাড়ুক, এমনটা চান না। নিউইয়র্ক সিটি বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল আবাসন বাজারের আবাসস্থল। এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে ঝলমলে বিলাসবহুল টাওয়ারের লোকেরা শ্রমিক শ্রেণির বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস করেন। এ শ্রমজীবী শ্রেণির মানুষ ক্রমবর্ধমান ভাড়া ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে তাল মেলাতে লড়াই করছেন। শহরের আবাসন খাতের অবস্থা চরম। নিউইয়র্ক শহরের আপার ইস্ট সাইড এলাকার বাসিন্দাদের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ যাচাই করে সিএনএন জানাতে পেরেছে, ওই এলাকার বাসিন্দারা বেনামে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পর শহর ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু এখনও এসব গল্প কাল্পনিক। যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ফল পছন্দ না হলে স্থানান্তরিত হওয়ার হুমকি দেওয়ার একটি দীর্ঘকালীন ঐতিহ্য রয়েছে। মামদানির আবাসন ও অর্থনৈতিক প্রস্তাবগুলো এমন এক সময়ে এসেছে, যখন নিউইয়র্কের ভাড়া ক্রমাগত বাড়ছে। রিয়েলেটর ডটকমের মতে, এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে শহরে গড় চাওয়া ভাড়া ছিল ৩ হাজার ৩৯৭ ডলার, যা এক বছরের আগের তুলনায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। এটা ২০২০ সালের শুরু থেকে ১৮ শতাংশ বেশি। বাত্রা জানান, কিছু ক্লায়েন্ট যারা ভাড়া আয়ের জন্য ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ভবন কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তারা এখন প্রস্তাবিত ভাড়া স্থগিত করার কারণে পুনর্বিবেচনা করছেন। নিউইয়র্কের এ পরিস্থিতির সুবিধা পেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রেরই ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য। সেখানে আবাসন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকে জানিয়েছেন, নিউইয়র্ক ছেড়ে আবারও ফ্লোরিডায় আসতে পারেন অনেকে। এমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ◈ মামদানির জয়ে নিউইয়র্কের আবাসন খাতে আতঙ্ক ◈ বিটকয়েনের ইতিহাসে রেকর্ড দাম

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস: আমাদের দায়বোধ ও প্রত্যাশা

প্রকাশিত : ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার ৬৮ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

“মুক্তিযুদ্ধ হচ্ছে বাংলার মানুষের ভূমিকাপত্র। মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের পথে হাজার বছরের যে দীর্ঘযাত্রা, এই ভূ-খণ্ডের মানুষের মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস হচ্ছে তার সারাৎসার।” বন্ধুর এ উক্তিটি মুক্তিযুদ্ধের গভীরতা ও আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অনিবার্যতাকে তুলে ধরে। স্বাধীনতার ৫৫ বছরে এসে এই সত্য আরও জোরালোভাবে উপলব্ধি করার প্রয়োজন যে, মুক্তিযুদ্ধ কেবল এক ঐতিহাসিক অধ্যায় নয়, বরং আমাদের অস্তিত্ব, সংস্কৃতি, এবং সার্বভৌমত্বের ভিত্তি।

ইতিহাসের প্রবাহ: সংস্কৃতি ও রাজনীতির মেলবন্ধন

ষাটের দশকের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, কীভাবে সংস্কৃতি আর রাজনীতি হাত ধরাধরি করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন বুনেছিল। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলার মানুষ তাদের জাতিগত পরিচয়ের শেকড় খুঁজে পায়। এই আন্দোলন প্রমাণ করে, মানুষের প্রকৃত পরিচয় তার ভাষা, সংস্কৃতি, ও নৃতাত্ত্বিক ইতিহাসে নিহিত।

১৯৫২ সালের এক দশক পর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলার সাংস্কৃতিক চেতনাকে দমাতে চেয়েছিল। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের মাধ্যমে এই চেষ্টার বিরুদ্ধে বাঙালির শক্ত অবস্থান স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একই ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয়দফা এবং পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের নির্বাচন বাংলার মুক্তির চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছায়।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ শুধুমাত্র সশস্ত্র সংগ্রাম নয়, এটি ছিল এক বহুমাত্রিক প্রতিরোধ—রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, বিক্ষুব্ধ শিল্পী সমাজ, এবং মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থার ভূমিকা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি বিশ্বকে মুক্তিযুদ্ধের ন্যায্যতা সম্পর্কে সচেতন করেছিল। অন্যদিকে, জহির রায়হানের স্টপ জেনোসাইড এবং মুক্তিসংগ্রামী শিল্পী সংস্থার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড শরণার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাদের মানসিক শক্তি যুগিয়েছে।

ইতিহাস চর্চার চ্যালেঞ্জ

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে। তবে ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র এবং রাজনৈতিক বিভেদ আমাদের ইতিহাসচর্চার পরিসরকে সংকুচিত করেছে। স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের প্রচারিত বিকৃত ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্মে কুপ্রভাব ফেলেছে।

আজও আমাদের দেখতে হয়, কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ষড়যন্ত্র হয়, কীভাবে ইতিহাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালানো হয়। সাতই মার্চের ভাষণ, জাতীয় পতাকা, কিংবা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানকে অস্বীকার করার চেষ্টা আমাদের অস্তিত্বকেই অস্বীকার করার শামিল।

ইতিহাসের পাঠ জরুরি কেন?

ইতিহাসকে উপেক্ষা করার অর্থ হলো ভবিষ্যতের জন্য অন্ধকার বেছে নেওয়া। তরুণ প্রজন্মের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। এটি করতে হবে শুধু বই পড়ে নয়, সাংস্কৃতিক চর্চা এবং ইতিহাসের নিবিড় গবেষণার মাধ্যমে।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমাদের জাতির পরিচয়ের ভিত্তি। এটি নিয়ে বিভ্রান্তি কিংবা অবহেলা আমাদের জাতীয় অস্তিত্বকেই দুর্বল করে। তাই, প্রয়োজন সত্যনিষ্ঠ ইতিহাসচর্চার, যা হবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে আলোর পথপ্রদর্শক। আমরা যদি ইতিহাসের আলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তবেই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা বাস্তবায়িত হবে।

সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক মূল্যবোধ রক্ষায় আমাদের ভূমিকা কি হতে পারে?

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে আমাদের প্রতিদিনের কাজের মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের যে দায়িত্বের ভার দিয়েছে, সেটি পালন করার জন্য প্রয়োজন সততা, নিষ্ঠা, এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT