বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদালতের দিকে চোখ জাতীয় পার্টির

প্রকাশিত : ০৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ, ১৬ নভেম্বর ২০২২ বুধবার ৯২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার আবেদনের ওপর আজ রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। ১০ নভেম্বর ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ মাসুদুল হকের আদালতে নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহারের আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

শুনানি করেন জিএম কাদেরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম। এরপর বিচারক ১৬ নভেম্বর অর্থাৎ আজ বৃহস্পতিবার আদেশ দেওয়ার কথা জানান। কী রায় হয়, তা জানতেই পার্টির নেতাকর্মীরা তাকিয়ে আছেন আদালতের দিকে।

এর আগে ৪ অক্টোবর জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা ও দলটির সাবেক সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা একটি মামলা দায়ের করেন জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে। ৩১ অক্টোবর সেই মামলার শুনানি শেষে আদালত জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। ঢাকার যুগ্ম জেলা জজ (১ম আদালত) মাসুদুল হক এই আদেশ দেন।

আদালতের এই নির্দেশনা মেনে দলীয় সভা-সমাবেশে অংশ নেননি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের। সংসদে গত অধিবেশনের শেষ দিন ভাষণ দেওয়া ছাড়া তিনি আর কোনো কথা বলেননি। মামলার বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরপরই জিএম কাদের আইনিভাবেই মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী দলীয় আইনজীবীদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি।

জানা যায়, জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারির পরপরই ৮ নভেম্বর এই আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশনের সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক শুনানির জন্য ১০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। যথারীতি ওইদিন শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার রায় দেওয়ার দিন নির্ধারণ করেন আদালত।

মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখতে আদালত আদেশ দেন। পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। তিনি আরও বলেন, হামলা-মামলা কিংবা অন্য কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করে জাতীয় পার্টির অগ্রযাত্রাকে কেউ থামাতে পারবে না। মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, একটি মামলা হয়েছে। আমরা আদালতের রায়ের প্রতি শতভাগ আস্থা রাখি। আশা করি, রায় আমাদের পক্ষেই যাবে এবং আমরা ন্যয়বিচার পাব। তিনি বলেন, আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে দলের বিরুদ্ধে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক সব মামলা মোকাবিলা করে এগিয়ে যাব।

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অর্থাৎ ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টি গঠন করেন। দীর্ঘ পথ চলায় এই দল থেকে অনেকে বেরিয়ে গিয়ে আলাদা দল গঠন করেন। কিন্তু মূল দল হিসাবে দেশের রাজনীতিতে ক্রমাগত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাতে গড়া জাতীয় পার্টি। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির আসন ছিল ৩২টি, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ২৭টি, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ৩৪টি আসন পায় দলটি। আর বর্তমানে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ২৬ জন।

দলের নীতিনির্ধারকদের মতে, আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় পার্টি যখন বেশ সরব ও সক্রিয়, তখনই এ ধরনের একটি মামলা দলের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্রেরই অংশ। তাদের মতে, বিগত দিনের মতো আগামী সংসদ নির্বাচনেও মূল ফ্যাক্টর হবে জাতীয় পার্টি। রাজনীতি নিয়ে যারা ভাবেন, যারা ভোট এবং ক্ষমতার অঙ্ক কষেন, তারা এটা ভালো করেই জানেন জাতীয় পার্টিকে বাদ দিয়ে সরকার গঠন করা প্রায় অসম্ভব। টানা তিন মেয়াদে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্রক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। প্রথমবার তারা জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোট গঠন করেই সরকারে যায়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় মেয়াদে দলটি ক্ষমতাসীন হওয়ার পেছনেও মূল অনুঘটকের কাজটি করে জাতীয় পার্টি।

পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জিএম কাদেরের পক্ষের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া এ প্রসঙ্গে বুধবার বলেন, নির্বাচন এলেই জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু হয়। দল ভাঙার চেষ্টা চলে। এবারও একই ধরনের খেলা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, এই মামলাও সেই ষড়যন্ত্রের অংশবিশেষ। তবে আমরা আশা করি, এই মামলার রায় আমাদের পক্ষেই আসবে। কারণ, যেসব অভিযোগ এনে মামলাটি করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া আরও বলেন, আমরা শুনানিতে বলেছি, এর আগে ২০১৯ সালে করা এ ধরনের একটি মামলা হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় আছে, যা এখনো ফয়সালা হয়নি। তাই একই ধরনের আরেকটি মামলা নিু আদালত নিতে পারে না, নিু আদালতে চলতেও পারে না। তিনি বলেন, আমরা আপাতত আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি। রায় হওয়ার পরপরই নতুন করে মাঠে নামবে জাতীয় পার্টি।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT