অরক্ষিত মিরপুরের শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ
প্রকাশিত : ০৮:২৪ পূর্বাহ্ণ, ১৯ জুলাই ২০২২ মঙ্গলবার ৭৬ বার পঠিত
রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধটি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। সৌধ চত্বর এখন মাদকসেবী, ছিনতাইকারী, ভবঘুরে ও কিশোর অপরাধীদের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। ডিএনসিসি ও প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় ধীরে ধীরে মর্যাদা হারাতে বসেছে পবিত্র এ স্থানটি।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, স্মৃতিসৌধের মূল গেটের সামনে বাজার বসেছে। আর বাজারের ময়লা-আবর্জনা পুরো রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। প্রতিদিন সকাল-বিকাল এ বাজার বসে বলে জানা গেছে। এই বাজারের কারণে নিজস্ব অবয়ব হারাতে বসেছে স্মৃতিসৌধটি।
স্মৃতিসৌধের ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে এক পাশে সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।’ অথচ ভেতরে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। দলীয় ব্যানার ও ফেস্টুন লাগানো রয়েছে কিছু স্থানে। নিরাপত্তাপ্রাচীর ভেঙে যাওয়ায় অবাধে প্রবেশ করছে লোকজন। স্মৃতিসৌধ চত্বরে উঠতি বয়সের তরুণরা দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছে। কিছু তরুণ-যুবক ক্রিকেট খেলছে। এ সময় কিছু তরুণ নিজেদের মধ্যে মারামারিতে লিপ্ত হয়। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানে মাদকসেবীদের আড্ডার পাশাপাশি মোবাইল ফোনে জুয়া খেলাও হয়। এছাড়া ভবঘুরে ও মানসিক ভারসাম্যহীনদের অবাধ যাতায়াত রয়েছে স্মৃতিসৌধ চত্বরে। গাছগাছালির ছায়ায় তারা নিশ্চিন্তে ঘুমায়। স্মৃতিসৌধের পাশে একটি জলাধার রয়েছে। পানির অভাবে এটি শুকিয়ে গেছে। ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পরিণত হয়েছে এটি।
এদিকে স্মৃতিসৌধের গণকবরে যাতায়াতে বিধিনিষেধ থাকলেও মাদকসেবীরা তা মানছে না। তারা প্রতিনিয়ত এখানে মাদকসেবন করে। এদিকে স্মৃতিসৌধে আসা দর্শনার্থীদের অনেকে মাজারের পবিত্রতা মানছেন না। তারা স্মৃতিফলক ও বেদির ওপর দাঁড়িয়ে সেলফি তোলেন। অনেকে অশোভন ও বাজে অঙ্গভঙ্গিও করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বলেন, এখানে মাদকসেবী ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বেশি। মাঝেমধ্যে ছিনতাইও হয়। স্মৃতিসৌধের ভেতরের পরিবেশটা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। কয়েক মাস আগে স্মৃতিসৌধের স্মৃতিফলক ধসে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা মনে করছেন, মাদকসেবীরা এটি ভেঙেছে।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য আবুল বাশার বলেন, আজ আমরা ২ জন ডিউটি করছি। আমাদের ইনচার্জ ছুটিতে রয়েছেন। একজন গেটে আর অন্যজন ভেতরে। ভেতরে যিনি ডিউটি করছেন, তার একার পক্ষে সব সামলানো সম্ভব নয়। আরও লোক হলে ভালো হয়।
ডিএনসিসির ১০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু তাহের বলেন, স্মৃতিসৌধ নিয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। কেউ মারামারি করলে আর মাদক খেলে সেটি পুলিশ দেখবে। আমি তো লোকজনের হাঁটা বন্ধ করতে পারি না। তা হলে তারা আমার বিপক্ষে যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিরাপত্তাপ্রাচীর ২ জায়গায় ভাঙা। এ কথা ঠিক। আর কত ঠিক করব। এ পর্যন্ত সাতবার ঠিক করেছি। ঠিক করার পর অন্য ওয়ার্ডের লোকজন তা ভেঙে ফেলে।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।