অভিন্ন কর্মসূচি ৫২ দল ও সংগঠনের
প্রকাশিত : ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ১২ জানুয়ারি ২০২৩ বৃহস্পতিবার ৯৫ বার পঠিত
সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারসহ বিভিন্ন দাবিতে বুধবার রাজধানীর সাত স্থানে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চসহ ৫২ সমমনা রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।
এ সময় তারা আলাদাভাবে গণ-অবস্থান কর্মসূচি থেকে ১৬ জানুয়ারি ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেন। একই দিন এ কর্মসূচি বিএনপিও পালন করবে।
এদিন একই সময়ে চার ঘণ্টার গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে সাত দলের গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১২ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, চারদলীয় বাম গণতান্ত্রিক ঐক্য, এলডিপি, গণফোরাম ও ১৫ সংগঠনের সমমনা গণতান্ত্রিক জোট।
গণ-অবস্থানকে কেন্দ্র করে সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। ঢাকাসহ ১০ সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে শান্তিপূর্ণভাবে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। বিএনপির নেতৃত্বে এসব দল, জোট ও সংগঠন গত ডিসেম্বর থেকে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে। গণ-অবস্থান তাদের দ্বিতীয় যুগপৎ কর্মসূচি।
গণতন্ত্র মঞ্চ : সরকারকে পতনের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসাবে বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে গণতন্ত্র মঞ্চ। এ সময় বিদ্যুতের দাম কমানোর দাবিতে ১৬ জানুয়ারি বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। ওইদিন রাজধানীতে কাওরান বাজারে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করবে গণতন্ত্র মঞ্চ।
মঞ্চের অন্যতম নেতা ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ূমের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খানসহ গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা।
মঞ্চের নেতারা অভিযোগ করেন, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয়। মোড়ে মোড়ে তল্লাশির নামে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হয়। সব বাধা পেরিয়ে নেতাকর্মীরা স্ব স্ব দলের কার্যালয় থেকে বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। এ কারণে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালনের কথা থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি। বেলা পৌনে ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কর্মসূচি শুরু হয় এবং দুপুর ২টায় শেষ হয়।
এলডিপি : বুধবার রাজধানীর পূর্ব পান্থপথে এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে চার ঘণ্টার গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি। এ সময় দলটির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমদ ১৬ জানুয়ারি সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে বলেন, সমগ্র দেশের অবস্থা ছাত্রলীগের মঞ্চের মতো। যে কোনো সময় ভেঙে পড়বে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন এলডিপির কেন্দ্রীয় নেতা ড. নিয়ামুল বশির, অ্যাডভোকেট এসএম মোরশেদ, অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, অধ্যাপিকা কারিমা খাতুন, বিল্লাল হোসেন মিয়াজি, সাহাদাত হোসেন মানিক প্রমুখ।
১২ দলীয় জোট : রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকের পাশে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ১২ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় ১৬ জানুয়ারি একই কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। জোটের সমন্বয়ক ও জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদার পরিচালনায় বক্তব্য দেন এনডিপির কারি আবু তাহের, বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিংকন, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।
১২ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট : রাজধানীর পুরানা পল্টন প্রীতম হোটেলের উলটোদিকে অবস্থান নেন ১২ দলের জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতাকর্মীরা। এ সময় ১৬ জানুয়ারি সারা দেশে ১০ দফাসহ বিদ্যুতের দাম কমাতে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টর আজ আওয়ামী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি। এদের হাত থেকে এদেশকে মুক্ত করতে না পারলে দেশের অর্থনীতি, সহাবস্থান এবং বাক্স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনা যাবে না।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ডিএল-এর সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, ন্যাপ ভাসানীর অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, এনপিপির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের কমরেড নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ন্যাপের এমএন শাওন সাদেকী প্রমুখ।
গণফোরাম : রাজধানীর আরামবাগে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে চার ঘণ্টার গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে মোস্তফা মহসীন মন্টু নেতৃত্বাধীন গণফোরাম। এতে অংশ নেন গণফোরাম সভাপতি মোস্তফা মহসীন মন্টু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট একেএম জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, খান সিদ্দিকুর রহমান, আইয়ুব খান ফারুক, মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানী, মির্জা হাসান, মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, নাছির হোসেন, আব্দুল হামিদ মিয়া, তাজুল ইসলাম, নিলুফার আহম্মেদ শাপলা, মহানগর দক্ষিণের হাবিবুর রহমান বুলু, মহানগর উত্তরের এরশাদ জাহান সুমন প্রমুখ।
একইভাবে চারদলীয় জোট বাম গণতান্ত্রিক ঐক্যের নেতাকর্মীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্বপ্রান্তের সড়কে গণ-অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এছাড়া ইয়ুথ ফোরাম, জিয়া নাগরিক সংসদ, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টি, জাতীয়তাবাদী চালকদলসহ ১৫ সংগঠনের ‘সমমনা গণতান্ত্রিক জোট’-এর নেতাকর্মীরা বিজয়নগর আকরাম টাওয়ারের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করেন।
বরিশালে গণতন্ত্র মঞ্চের গণ-অবস্থান : বরিশাল ব্যুরো জানায়, দুপু?রে বরিশালে গণতন্ত্র মঞ্চের অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) বরিশাল বিভাগের সমন্বয়ক সোহরাব হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের আবদুর রশিদ নীলু, গণঅধিকার পরিষদের রফিকুল ইসলাম রাসেল, গণসংহতি আন্দোলনের আরিফুর রহমান মিরাজ, ইয়াসমিন সুলতানা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সমীরন হালদার, গণঅধিকার পরিষদের শামীম রেজা প্রমুখ।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।