আফ্রিকার স্থলবেষ্টিত দেশ শাদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় লোগোন-অক্সিডেন্টাল অঞ্চলে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৫ জন নিহত এবং ৬ জন আহত হয়েছেন। দেশটির সরকারের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, যদিও এ সংঘর্ষে কারা জড়িত ছিল সে বিষয়ে সরকার সরাসরি কিছু বলেনি। তবে অঞ্চলটি দীর্ঘদিন ধরে আন্তঃজাতিগত ও ধর্মীয় উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে।
শাদ সরকারের মুখপাত্র ও যোগাযোগমন্ত্রী গাসিম শরিফ মেহমেত বলেন, ‘মর্মান্তিক এই সংঘর্ষে ৩৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ছয়জন আহত হয়েছেন। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনী দ্রুত হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে’।
শাদের দক্ষিণাঞ্চলে বারবারই সহিংসতার ঘটনা ঘটে থাকে। সেখানে প্রধানত খ্রিস্টান ও অ্যানিমিস্ট (প্রকৃতিপূজক) কৃষক সম্প্রদায়দের সঙ্গে যাযাবর মুসলিম পশুপালকদের বিরোধ নিয়েই সহিংসতা দেখা দেয়। এ সংঘর্ষের পেছনে রয়েছে মূলত জমি, পানি ও পশুর চারণভূমির ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ।
দক্ষিণ শাদের কৃষক সম্প্রদায়গুলো প্রধানত খ্রিস্টান ও অ্যানিমিস্ট। তারা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে, মুসলিম-প্রধান উত্তরাঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করা ক্ষমতাসীন সরকারই মূলত তাদের প্রতি অবিচার ও অবহেলা করছে।
জাতিগত ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট
শাদ মূলত জাতিগতভাবেই একটি বিচিত্র দেশ। সেখানে আরব এবং আফ্রিকান জাতিগোষ্ঠীর মানুষ বাস করে। দেশটির উত্তরে মুসলিম যাযাবর সম্প্রদায়ের আধিপত্য এবং দক্ষিণে বসবাসকারী কৃষিভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বিদ্যমান।
সরকারের ভূমিকা
সরকার প্রায়ই তাদের মধ্যকার সংঘর্ষগুলোকে ‘স্থানীয় বিরোধ’ বলে উল্লেখ করলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন, এটি বৃহত্তর কাঠামোগত বৈষম্য ও গভীর সামাজিক বিভাজনের বহিঃপ্রকাশ।
যদিও নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে বলে সরকার দাবি করছে, তবে অতীত অভিজ্ঞতা বলছে— এ ধরনের সহিংসতার পর প্রতিশোধ ও পাল্টা আক্রমণের আশঙ্কা থেকেই যায়। বিশেষ করে যেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিকে পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
প্রকাশক মোঃ সোহেল রানা ও সম্পাদক: মোঃ মোজাম্মেল হক। ২৭, কমরেড রওসন আলী রোড, বজলুর মোড়, কুষ্টিয়া-৭০০০।
© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | Design and Developed by- DONET IT