বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৮ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানবজাতির সামগ্রিক নিরাপত্তায় ইসলাম

প্রকাশিত : ০৭:০৭ পূর্বাহ্ণ, ৮ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার ১২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ইসলাম মানবজাতির সামগ্রিক নিরাপত্তার কথা বলে। ইসলাম মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধ, জীবন ও সম্পদ, সম্মান ও সম্ভ্রম, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। রাসুল (সা.)-এর একটি হাদিস থেকে নিরাপত্তার বিস্তারিত ধারণা লাভ করা যায়। তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে লোক পরিবার-পরিজনসহ নিরাপদে সকালে উপনীত হয়, সুস্থ শরীরে দিনাতিপাত করে এবং তার কাছে সারা দিনের খোরাকি থাকে, তবে তার জন্য যেন পুরো দুনিয়াটাই একত্র করা হলো।’ (তিরমিজি) নিরাপত্তার প্রশ্নে ইসলাম পাঁচটি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেয়। যার প্রতিটি মৌলিক মানবাধিকারের অন্তর্ভুক্ত এবং যা ব্যাপকার্থে জীবনের সব দিক অন্তর্ভুক্ত করে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত পাঁচটি বিষয় উল্লেখ করা হলো।

জীবনের নিরাপত্তা : মানবজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসলাম সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কঠোর বিধান প্রণয়ন করেছে। জীবনের নিরাপত্তা বলতে শুধু প্রাণরক্ষা নয়; বরং জীবনের স্থিতিশীলতা, সুস্থ ও স্বাভাবিক বিকাশের প্রয়োজনীয় সব কিছু এর অন্তর্ভুক্ত। এ জন্য ইসলাম যেমন বাহ্যত হত্যাকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছে, তেমনি যা কিছু মানবজীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয়, তাও নিষিদ্ধ করেছে।

ধর্মের নিরাপত্তা : ধর্মের নিরাপত্তার অর্থ আল্লাহর একত্ববাদের বিশ্বাস ও রাসুল (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ শরিয়ত পালনের নিশ্চয়তা। ইসলামি আকিদা লালন ও শরিয়ত পালনে কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে তা দূর করা। ইসলাম যেমন মুমিনের ধর্মীয় জীবনের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়, তেমনি শর্তসাপেক্ষে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় জীবনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করে।

মেধা-বুদ্ধির নিরাপত্তা : ইসলাম মানুষের মেধা, বুদ্ধি ও বিবেক-বোধকে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে তা সংরক্ষণ ও তার সুষ্ঠু ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে। মানুষের বিবেক-বুদ্ধি ও বিবেচনাবোধ নষ্ট করে এমন বিষয় ইসলামে নিষিদ্ধ। এ কারণেই ইসলাম সব ধরনের নেশাদ্রব্য নিষিদ্ধ করেছে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘শয়তান মদ ও জুয়ার দ্বারা তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ ঘটাতে চায়। তোমাদের আল্লাহর স্মরণ ও নামাজে বাধা দিতে চায়। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?’ (সুরা মায়েদা ৯১) একই কারণে ইসলাম কুসংস্কার, অপশিক্ষা, জাদুকর ও গণকের কাছে যাওয়া ও শিরকি বিশ্বাসগুলো নিষিদ্ধ করেছে। কেননা এসব বিশ্বাস ও কাজ মানুষের মেধা, বুদ্ধি ও বিবেচনাবোধকে সঠিক পথে এগোতে দেয় না।

মানব বংশের নিরাপত্তা : মানবসভ্যতার অস্তিত্ব রক্ষায় মানুষের বংশধারা টিকিয়ে রাখা আবশ্যক। অন্যদিকে মানুষের স্বভাব-চরিত্রে তার বংশীয় ধারার প্রভাব বিদ্যমান। ইসলাম মানুষের বংশধারা টিকিয়ে রাখতে এবং জিনগত বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রাখতে বিয়ের বিধান দিয়েছে। ধর্ষণ, ব্যভিচার ও ভ্রুণ হত্যার মতো যেসব অপরাধ মানবজাতির বংশীয় পরম্পরাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয় তা নিষিদ্ধ করেছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে তোমাদের যাকে ভালো লাগে, দুই, তিন অথবা চার; আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তবে একজনকে অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীকে।’ (সুরা নিসা ৩) অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা দারিদ্র্যের ভয়ে সন্তানদের হত্যা করো না। তাদের আমিই রিজিক দিই এবং তোমাদেরও। নিশ্চয়ই তাদের হত্যা করা মহাপাপ।’ (সুরা বনি ইসরাইল ৩১)

সম্পদের নিরাপত্তা : মানবজীবনে সম্পদের গুরুত্ব অনেক। ইসলাম মানুষের সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করেছে। অন্যায়ভাবে কারও সম্পদ আত্মসাৎ করা নিষিদ্ধ। শরিয়ত সুদ, ঘুষ, চুরি, ডাকাতি ও অপদখলকে অপরাধ আখ্যা দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা পরস্পরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; তবে পারস্পরিক সন্তোষের ভিত্তিতে ব্যবসা করা বৈধ। পরস্পরকে হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।’ (সুরা নিসা ২৯)

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT