সোমবার ২৩ জুন ২০২৫, ৯ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রবাসে ছুটিহীন মে দিবস

প্রকাশিত : ০৮:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ২ মে ২০২৫ শুক্রবার ৪৭ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

আমরা কমবেশি অনেকেই জানি মে দিবস কেন চালু হয়েছে, তাই এটা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে যেটা বলার আছে মে দিবস সম্পর্কে জানলেও এটা কয়জনের পালন করার সুযোগ রয়েছে বা এটা আদৌ কি শ্রমিকদের কোন কল্যাণে এসেছে?

২০১৫ সালে আমি স্টুডেন্ট ভিসায় সাইপ্রাস যাওয়ার পর পড়াশোনার পাশাপাশি ওয়ার্কশপের কাজে যোগ দিই। প্রথম বছর মনে করেছিলাম ১লা মে সরকারি বন্ধ, মে দিবসের আগেরদিন বসকে বলেছিলাম আগামীকাল আমাদের ছুটি না?

সে হেসে বলল ‘মে দিবস’ এটা আবার কি? এ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। আসলেই ঐ দেশের প্রায় লোক মে দিবস সম্পর্কে অবগত নয়। অবগত হবার কথাও না। কারণ মে দিবসটি মূলত বিশেষ যে কারণে চালু করা হয়েছিল, ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটির পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা করা হয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বে ১২ ঘণ্টা ডিউটি নাই বললেই চলে। ৮ ঘণ্টার বাইরে যা করবে তা ওভারটাইম হিসেবে মজুরি পরিশোধ করা হয়, সেজন্য তারা মে দিবসটিকে এতটা গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। যার ফলে সরকারিভাবে সেদিন কোন ছুটি নেই।

কিন্তু বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে এমনকি মধ্যপ্রাচ্যেও এখনো ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি চালু রয়েছে। শুধু বিশেষ কিছু সেক্টরে ৮ ঘণ্টা সাধারণ ডিউটি। তাই হয়ত আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশে মে দিবস নিয়ে এতটা মাতামাতি হয়।

বলছিলাম সাইপ্রাসের কথা—তখন বন্ধুদেরকে মন খারাপ করে বলছিলাম ভাই কি চাকরি করি মে দিবসেও বন্ধ নেই। তখন তাদের মধ্যে কয়েকজন বলল ভাই তোমার কাজ আছে বলে বন্ধের জন্য চিন্তা কর আর আমাদের যে কাজই নাই মে দিবস এসব দিয়ে আমরা কি করব? আসলেই প্রবাসে একদিন কাজ না থাকা মানে অনেক পিছিয়ে পড়া, সাইপ্রাসে অন্যান্য সরকারি ছুটিগুলিতে বন্ধ দিলেও বেতন দেওয়া হয় না।

এখানে দৈনিক ডিউটির উপর বেতন নির্ভর করে। তাই এখানে সরকারি ছুটি পাওয়া মানে লসটা নিজের। সুতরাং এই ‘মে দিবস’ কি আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নাকি এটি নামেমাত্র? এরপর যখন ২০২০ সালে আরব আমিরাতে আসলাম এখানেও দেখি একি অবস্থা। মে দিবসে শ্রমিকদের কোন ছুটি নেই। মধ্যেপ্রাচ্যের মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী দেশ হল সংযুক্ত আরব আমিরাত। এখানে এসে দেখলাম মানুষের প্রতিটা সেকেন্ডের মূল্য আছে৷ যে যত বেশি কাজ করতে পারে ততবেশি আয়। আরব আমিরাতে যেহেতু এখন কাজের সুযোগ অনেক বেশি তাই একজন মানুষ চায়লে মাসে ৩০ দিন কাজ করতে পারে।

এখানে যারা কন্ট্রাক্টশন সেক্টর বা বিভিন্ন সুপার মার্কেট ও গ্রোসারিতে কাজ করে তারা আদৌ জানে না মে দিবস নামে যে একটা দিবস আছে। কারণ এ দিবসে কোন বন্ধ নেই এখানেও। এখানে কন্ট্রাক্টশন সেক্টরগুলিতে সাধারণ ডিউটি হল ৮ ঘণ্টা ও সপ্তাহে একদিন ছুটি রয়েছে। ৮ ঘণ্টার বাইরে ও বন্ধের দিন কাজ করলে তা হল ওভারটাইম। মে দিবসের নামে যদি বন্ধ দিয়ে মালিকপক্ষ ঐ একদিনের বেতন কাটে তাহলে এই মে দিবস কি শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য নাকি অকল্যাণের জন্য সে প্রশ্ন থেকে যায়!

আবার যারা ব্যবসা করে আরব আমিরাতে, এখানে ব্যবসা করা মানে একদিনে অনেক খরচ একদিন যদি ব্যবসা বন্ধ থাকে তাহলে অনেক টাকা লোকসান এখানে যে অপ্রয়োজনে একদিন ব্যবসা বন্ধ রাখবেন সে সুযোগ নেই। সুতরাং বলা যায় এই মে দিবস কারো পক্ষে গেলেও আবার কারো বিপক্ষে চলে যায়। তাই হয়ত পুঁজিবাদী দেশগুলিতে মে দিবস নামেমাত্র থাকলেও এটি পালন করা হয় না।

বাংলাদেশে যারা মে দিবস নিয়ে বেশি মাতামাতি করছে তারাও বলতে পারবেনা এটি তাদের কোন কাজে আসে, একজন রিক্সা বা সিএনজি চালক বা সাধারণ দিন মজুর যদি একদিন কাজ করতে না পারে তার পরিবার না খেয়ে থাকবে। এই মে দিবস দিয়ে তার পেট চলবেনা। তাই বলা যায় শুধু প্রবাস কেন; দেশেও ছুটিহীন এই মে দিবস।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT