সোমবার ২০ জানুয়ারি ২০২৫, ৬ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিরকুমার রতন টাটার ৪ হাজার কোটি রুপির উত্তরসূরি হবেন কে?

প্রকাশিত : ০৮:২৩ পূর্বাহ্ণ, ১১ অক্টোবর ২০২৪ শুক্রবার ২৩ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ভারতীয় শিল্পপতি টাটা গ্রুপের সাবেক চেয়ারম্যান রতন টাটা বিয়ে করেননি। সুতরাং তার কোনো সন্তানও নেই। মৃত্যুর আগে তিনি তার বিপুল সম্পদ দান করেও যাননি। ফলে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে রতন টাটার রেখে যাওয়া কয়েক হাজার কোটি রুপির সম্পদের উত্তরসূরি হচ্ছেন কে?

বুধবার (০৯ অক্টোবর) রাতে মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। মৃত্যুর আগে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি রুপি।

১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর মুম্বাইয়ে পারসিক পরিবারে জন্ম হয় রতন টাটার। রতন টাটার যখন ১০ বছর বয়স, সেই সময় তার মা-বাবা আলাদা হয়ে যান। তার দাদি নওয়াজবাই টাটার কাছে বেড়ে ওঠেন তিনি। রতন টাটার এক ভাই জিমি টাটা, আরেকজন সৎভাই নোয়েল টাটা।

১৯৯১ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান ছিলেন এই রতন টাটা। দীর্ঘদিন ধরে রাজত্য ধরে রাখা এই শিল্পপতি ব্যাপক সাফল্য অর্জন করলেও সাধারণ মানুষের মনে সর্বদা একটি প্রশ্ন ছিল, কেন রতন টাটা অবিবাহিত? তবে মজার ব্যাপার হলো, একবার নয় দুবার নয়, রীতিমতো চারবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, প্রায় তার বিয়ে হয়েই যাচ্ছিল। কিন্তু নানা কারণে বিয়ে করতে পারেননি। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে কাজ করার সময় তিনি প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের কারণে মেয়েটির বাবা-মা তাকে ভারতে পাঠানোর বিরোধিতা করেন। সে সময় তিনি দেশে ফিরে আসেন। এরপর আর বিয়ে করা হয়নি তার।

জানা গেছে, বর্তমানে টাটা গোষ্ঠীর বিভিন্ন উচ্চ পদে কিছু তরুণ ও প্রতিভাবান নেতৃত্বে রয়েছেন। তারাই রতন টাটার প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন বোর্ডের দায়িত্বে রয়েছেন। রতন টাটা সব এমনভাবে সাজিয়েছেন যাতে তার মৃত্যুর পরও শিল্প গোষ্ঠীটি মুখ থুবড়ে না পড়ে। এ হিসাবে টাটার সম্পত্তি একক কারও হস্তগত হচ্ছে না। বোর্ডের পরিচালকদের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ থাকবে।

সেসব উচ্চ পদে থাকা তরুণ ও প্রতিভাবানদের মধ্যে রয়েছেন নিশান্ত টাটা। যিনি টাটা মোটরসের পরিচালনায় যুক্ত। তার আধুনিক চিন্তাধারা এবং নতুন প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ টাটা গোষ্ঠীকে নতুন উচ্চতায় নিতে সক্ষম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্বভাবতই টাটা মোটরসের অধীনে থাকা রতন টাটার সম্পদ তিনিই নিয়ন্ত্রণ করবেন।

রতন টাটার সৎ ভাই নাভাল টাটার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তান নোয়েল টাটা। বর্তমানে তিনি টাটা গোষ্ঠীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। উত্তরসূরী হিসেবে তার নামও থাকছে। ট্রেন্ট ও টাটা ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এবং টাইটান ও টাটা স্টিলের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত নোয়েল টাটা।

নোয়েল টাটার ছোট ছেলে নেভিল টাটা। বয়স মাত্র ৩২, কিন্তু তিনি ইতোমধ্যেই টাটা গোষ্ঠীর অন্তর্গত ট্রেন্ট লিমিটেডের অধীনে স্টার বাজারের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন। তারুণ্যের উদ্যম ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি তাকে টাটা গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ একক নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রেখেছে বলে জানা গেছে।

নোয়েল টাটার মেয়ে লিয়া টাটা এই গ্রুপের হসপিটালিটি সেক্টরকে নতুন এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। তার নেতৃত্বে তাজ হোটেলের অভাবনীয় সাফল্য বয়ে আনাসহ হসপিটালিটি সেক্টরের প্রবল বিকাশ ঘটেছে। তিনিও তার অধীনে থাকা রতন টাটার সম্পদের অলিখিত উত্তরসূরি।

টাটা গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ হিসেবে আলোচনায় রয়েছে নোয়েল টাটার আরেক মেয়ে মায়া টাটার নামও। ৩৪ বছর বয়সী মায়া, টাটা গোষ্ঠীর ডিজিটাল সেক্টরে বিপ্লব এনেছেন, বিশেষ করে তার নেতৃত্বে লঞ্চ হওয়া টাটা নিউঅ্যাপ গ্রুপের ডিজিটাল সাফল্য এক বিরাট উদাহরণ হয়ে উঠেছে। তার দক্ষতায় রতন টাটার রেখে যাওয়া সম্পদ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অপরদিকে কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী মুনাফার আনুপাতিক হারে মায়া টাটার সম্পদও বাড়বে।

২০০০ সালে ‘পদ্মভূষণ’ ও ২০০৮ সালে ‘পদ্মবিভূষণ’ সম্মাননা পান রতন টাটা। তার মেধা ও কৌশল সর্বজনের কাছে প্রশংসনীয়। অনেকে বলছেন, রতন টাটা নিজেও জানতেন তার মৃত্যুর পর সুনির্দিষ্ট উত্তরসূরির প্রশ্ন বা বিতর্ক উঠতে পারে। অত্যান্ত বুদ্ধিমান রতন টাটা অন্য কোনো উপায়ে উত্তরসূরি নির্বাচনের হলফনামা রেখে যেতে পারেন। যদি এমনটি হয় তবে সব হিসাব-নিকাশ বদলে যাবে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT