মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউরোপের দেশে দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতি

প্রকাশিত : ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ণ, ১৫ মার্চ ২০২৫ শনিবার ২২ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

রাশিয়ার ভয়ে ইউরোপের দেশে দেশে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি। সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইতোমধ্যেই প্রতিরক্ষা জোরদারে তৎপর হয়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি দেশ। কেউ ঝুঁকছে অস্ত্র উৎপাদনে, কেউ আবার সামরিক প্রশিক্ষণে ঠেলছে দেশের সব নাগরিককে। বিশেষ করে জার্মানি, পোল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের ভয় জেঁকে বসেছে দেশগুলোতে। পরমাণু শক্তিধর রাশিয়ার ভয়ে রীতিমতো কাঁপুনি উঠে গেছে দেশগুলোর সরকারযন্ত্রে।

গত সপ্তাহেই পোল্যান্ডের প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষকে ব্যাপক পরিসরে সামরিক প্রশিক্ষণের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক। পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলেও পার্লামেন্টে জানিয়েছেন তিনি। আকার বাড়াচ্ছেন পোলিশ সেনাবাহিনীরও। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর আট লাখ সেনা আছে। রাশিয়ার আছে ১৩ লাখ। তুলনামূলকভাবে পোল্যান্ডের বর্তমান সেনা সংখ্যা দুই লাখ। এই সংখ্যাকে পাঁচ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনাও করছেন তিনি। রণপ্রস্তুতি শুরু হয়েছে বেলজিয়ামেও। সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আহ্বান জানাচ্ছে দেশটির সরকার।

পারমাণু অস্ত্র চাচ্ছে পোল্যান্ড

রাশিয়ার যেকোনো আক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আবারও পারমাণবিক অস্ত্র চাচ্ছে পোল্যান্ড। বৃহস্পতিবার ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ ডুডা এ আহ্বান জানিয়েছেন। তার মতে, এটি রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ হিসেবে কাজ করবে। পাশাপাশি দেশের নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে। সম্প্রতি রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির কারণে রাশিয়ার এই সীমান্তবর্তী দেশটি পারমাণবিক সুরক্ষার বিষয়ে আরও আগ্রহী হয়ে উঠছে। তবে এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০২২ সালে বাইডেন প্রশাসনের কাছেও একই অনুরোধ করেছিলেন ডুডা। তার আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ওজসিয়েচ কোলারস্কি বৃহস্পতিবার সকালে রেডিওতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘পারমাণবিক সুরক্ষা নিশ্চিত হলে পোল্যান্ডের নিরাপত্তা আরও মজবুত হবে।’ তবে ডুডার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন। তিনি সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, পোল্যান্ড বর্তমানে ফ্রান্সের সঙ্গে আলোচনা করছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপকে রাশিয়ার হুমকি থেকে রক্ষার জন্য ফ্রান্সের পারমাণবিক প্রতিরক্ষা ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছেন। রাশিয়া অবশ্য এই পরিকল্পনাকে ‘উসকানিমূলক’ বলে উল্লেখ করেছে এবং কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

জার্মানিতে বাধ্যতামূলক সেনা প্রশিক্ষণ!

জার্মানিতে বাধ্যতামূলক করা হতে পারে সেনা প্রশিক্ষণ। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার এ বিষয়ে আলোচনা করেছে ক্ষমতায় বসতে যাওয়া দেশটির কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যরা। এবারের নির্বাচনে শীর্ষস্থানে থাকা সিডিইউ এবং সিএসইউ ব্লকের প্রধান ফ্রেডরিক মার্জ বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুগে ইউরোপের নিরাপত্তা আরও ভালোভাবে পরিচালনা করা যাবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনীতে অনেক বেশি কর্মী শক্তি প্রয়োজন।’

উল্লেখ্য, ২০২৪-এর শেষ নাগাদ জার্মান মিলিটারির নিচের র‌্যাংকগুলোর মধ্যে ২৮% পদ খালি রয়েছে। বছর শেষে পদোন্নতি দেয়ার সময় ২০%-এর মতো পদ শূন্য থেকে যাচ্ছে। বর্তমানে জার্মান সশস্ত্র বাহিনীতে এক লাখ ৮১ হাজার সৈন্য রয়েছে। কিন্তু কমিশনার এফা হ্যোগল মনে করছেন, শুধু এই ব্যবস্থার পুনর্বহালই যথেষ্ট নয়। কেননা এ ধরনের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করার মতো পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ও প্রশিক্ষক বর্তমানে নেই বলেও জানান তিনি। ২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর থেকে জার্মানি বড় আকারের পুনঃসশস্ত্রীকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনে বার্লিনের প্রতিরক্ষা নীতিতে পরিবর্তন আরও জরুরি হয়ে উঠেছে।

প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করছে ইইউ

সামরিক প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ বিষয়ে ইইউ ১৯ মার্চের মধ্যে একটি শ্বেতপত্র উপস্থাপন করবে। শ্বেতপত্রে খসড়া অনুযায়ী, ইউরোপীয় কমিশন ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে প্রতিরক্ষা এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর নিয়ে ৮০০ বিলিয়ন ইউরোর একটি সর্বজনীন প্যাকেজ উপস্থাপন করবে।

গত মঙ্গলবার ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় সংসদে একটি সেশনে সংস্থাটির প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ বিষয়ক কমিশনার আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াস এই পরিকল্পনার চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। বলেন, বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তার পরিস্থিতি পরিবর্তিত হওয়ার কারণে ইউরোপের প্রতিরক্ষা শক্তি আরও জোরালো করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কুবিলিয়াস উল্লেখ করেছেন, রাশিয়ার সামরিক শিল্প পুরো ক্ষমতায় কাজ করছে । আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ন্যাটোর সঙ্গে একটি সম্ভাব্য সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপকে এর আগে কখনো এত বেশি প্রস্তুত হতে হবে না, আর এই প্রস্তুতি হলো যুদ্ধ প্রতিরোধের একমাত্র উপায়।’ তবে, কুবিলিয়াস উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে ইইউএর প্রতিরক্ষা ক্ষমতা অপর্যাপ্ত, বিশেষ করে ট্যাংক, আর্মড ভেহিকেলস এবং আর্টিলারির মতো সামরিক সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি পূরণের জন্য তিনি ৫০০ বিলিয়ন বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT