রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫, ২রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তি টানতে সম্মত রাশিয়া

প্রকাশিত : ০৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার ১৯ বার পঠিত

অনলাইন নিউজ ডেক্স :

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা। সাড়ে চার ঘণ্টা চলা এ বৈঠক অত্যন্ত ইতিবাচক ও গঠনমূলক হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বৈঠকে দু’পক্ষ ওয়াশিংটন ও মস্কোতে নিজ নিজ দূতাবাসে কর্মীদের পুনর্বহাল, ইউক্রেন শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল তৈরি এবং উভয় পক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা অন্বেষণ করতে সম্মত হয়েছে। মস্কো ইউক্রেন যুদ্ধের ন্যায্য ও স্থায়ী সমাপ্তি টানতে একটি গুরুতর প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে ইচ্ছুক বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। খবর নিউইয়র্ক টাইমস ও আলজাজিরার।

আলোচনা শেষে পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সাড়ে চার ঘণ্টার আলোচনা সফল হয়েছে। উভয় পক্ষ পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকের শর্তগুলো নিয়ে আলোচনা করেছে। তবে পরবর্তী বৈঠকের জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।

ইউক্রেন সংঘাতের অবসান হলে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্কের জন্য ‘অসাধারণ সুযোগ’ তৈরি হবে বলে মনে করেন মার্কো রুবিও। রিয়াদে রুশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দু’পক্ষ তিনটি লক্ষ্য অর্জনে সম্মত হয়েছে। ওয়াশিংটন ও মস্কোতে তাদের নিজ নিজ দূতাবাসে কর্মীদের পুনর্বহাল এবং ইউক্রেন শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে একটি উচ্চ পর্যায়ের দল তৈরি করা হবে। পাশাপাশি তারা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টিও অন্বেষণ করবে।

তবে এ আলোচনায় ইউক্রেন ও ইউরোপকে আমন্ত্রণ না করার বিষয়টি তাদের পাশ কাটানো নয় বলে দাবি করেন তিনি। রুবিও বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আলোচনার এক পর্যায়ে যুক্ত হবে। আজকের বিষয়টি দীর্ঘ যাত্রার প্রথম একটি ধাপ মাত্র।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও উভয় পক্ষ নীতিগতভাবে বেশ কয়েকটি বিষয়ে একমত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। পুতিন-ট্রাম্প বৈঠকের ভিত্তি স্থাপন করতে আলোচনা হওয়ার কথাও নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আলোচনা কার্যকর এবং গঠনমূলক ছিল।

আলোচনার বিষয়ে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ইউক্রেনের ন্যাটো সদস্যপদ মস্কোর কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কিয়েভকে জোটে নিতে কেবল অস্বীকৃতিও রাশিয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। জোটকে ২০০৮ সালের বুখারেস্টের প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করতে হবে। ২০০৮ সালের এপ্রিলে বুখারেস্টে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি ইঙ্গিত দেয়, জর্জিয়া ও ইউক্রেন প্রতিরক্ষা জোটের সদস্য হবে।

সৌদি আরবে মস্কোর আলোচক দলের সদস্য পুতিনের একজন সহকারী ইউরি উশাকভ বলেছেন, আগামী সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের দেখা হওয়ার সম্ভাবনা কম। এর আগে কয়েকটি গণমাধ্যম জানায়, দুই নেতা আগামী সপ্তাহে দেখা করবেন।

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার আলোচনায় কোনো আশা দেখতে পাচ্ছে না বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা থেকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনকে ছাড়াই ‘ইউক্রেন সম্পর্কে’ আলোচনা হচ্ছে।

জেলেনস্কির দলের একজন সদস্য এবং দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটির প্রধান ওলেকসান্ডার মেরেঝকো বলেন, এটা একেবারে কিছুই নয়। এর কারণ হলো, ইউক্রেন ও রাশিয়ার লক্ষ্য সম্পূর্ণরূপে অমীমাংসিত এবং তারা তাদের অবস্থানের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত। এটি কেবল ট্রাম্পের বাগাড়ম্বরপূর্ণ বক্তব্য।

এদিকে, বছরের পর বছর ধরে ইউরোপীয় নেতারা সবকিছুতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে এসেছেন। দীর্ঘদিনের মিত্র দেশটি হঠাৎ করেই যেন প্রতিপক্ষের মতো আচরণ শুরু করেছে। দেশটির সাম্প্রতিক আচরণে হতবাক হয়ে পড়েছেন ইউরোপীয় নেতারা। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মঙ্গলবার সৌদি আরবে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসার পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপ-মার্কিন উত্তেজনা তীব্র হয়ে উঠেছে। চলমান সংঘাতটি ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য অস্তিত্বগত বিষয় হলেও সেই আলোচনায় তাদের কাউকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর আগে গত সোমবার প্যারিসে তাড়াহুড়া করে আয়োজিত বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমানো নিয়ে আলোচনা করেছেন।

এ পরিস্থিতি তাদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করছে। এরই মধ্যে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানিসহ অন্যান্য দেশ শান্তিরক্ষী হিসেবে ইউক্রেনে কয়েক হাজার সেনা মোতায়েন করার আলোচনা করেছে। ইউরোপজুড়ে ইউক্রেনের প্রতি জনসমর্থন শক্তিশালী হলেও এটি নেতাদের কঠিন পরিস্থিতিতে ফেলতে পারে। ইউক্রেনের মাটিতে সম্ভাব্য বিপজ্জনক দায়িত্ব পালনে সেনা পাঠানো দ্রুত একটি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধে রূপ নিতে পারে। শান্তিরক্ষী বাহিনীর আকার সম্পর্কে এখনও ধারণা পাওয়া না গেলেও বাজেট সংকটের এই সময়ে এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল কাজ হবে।

শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি anusandhan24.com'কে জানাতে ই-মেইল করুন- anusondhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।

anusandhan24.com'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

এই বিভাগের জনপ্রিয়

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।     বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন।  নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।  নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন।  তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।  বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।   এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে।  ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

ইরানি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ নাগরিককে দীর্ঘদিন বন্দি রাখার পর মুক্তি দিয়েছে তেহরান। ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে যুক্তরাজ্য ৪০ কোটি পাউন্ড ইরানের কাছে হস্তান্তরের পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুক্তির পর নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরি যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন। নাজানিন জাঘারি প্রায় ছয় বছর ধরে ইরানে বন্দিজীবন কাটিয়েছেন। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন বলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। নাজানিন জাঘারি ও আনোশেহ আশোরিকে বহনকারী প্লেন অক্সফোর্ডশায়ারের ব্রিজ নর্টন ব্রিটিশ সামরিক বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। এর আগে তারা ওমানে সাময়িক সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি নেন। তারা একসঙ্গেই প্লেন থেকে নেমে আসেন এবং বিমানবন্দরে প্রবেশের পর পর উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে হাত নাড়েন। এদিকে মার্কিন নাগরিকত্ব থাকা মোরাদ তাহবেজ নামে আরও একজনকেও কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বুধবার তাদের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ত্রাস এবং প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ বিষয় ইরানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, এর আগে ইরানের কাছে ইসলামি বিপ্লবের আগে অর্থাৎ প্রায় ৪৩ বছর আগের দেনা হিসেবে ব্রিটিশ সরকার তেহরানকে ৪০ কোটি পাউন্ড (৫২০ মিলিয়ন ডলার) প্রদান করেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, এটি নিশ্চিত করতে পেরে আমি খুব খুশি, নাজানিন জাঘারি এবং আনোশেহ আশোরিকে অন্যায়ভাবে বন্দি রাখার দিন শেষ হয়েছে। তারা মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছে।

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। anusandhan24.com | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বে-আইনি, Design and Developed by- DONET IT